গৃহবধূর হাত কর্তন: স্বামীর ১২ বছর, দণ্ডিত তিন সহোদরও

শেরপুরে এক গৃহবধূকে যৌতুকের জন্য হাত কেটে, কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে আহত করার দায়ে তার স্বামীর ১২ বছর ও স্বামীর তিন সহোদরের তিন বছর কারাদণ্ড হয়েছে।

শেরপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Dec 2021, 05:12 PM
Updated : 5 Dec 2021, 05:12 PM

রোববার শেরপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. আখতারুজ্জামান আসামিদের উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডিতরা হলেন লিটন মিয়া (২৮) ও তার তিন সহোদর রিপন মিয়া (৩৮), উজ্জ্বল মিয়া (৪৫) ও নুর ইসলাম (৫০)।

লিটন মিয়াকে ১২ বছর সশ্রম কারাদণ্ডসহ মামলার বাদীকে এক লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং নির্যাতনে সহায়তা ও আঘাত করায় তিন সহোদরের তিন বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণের আদেশ দেওয়া হয়।

আদেশ অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের টাকা লিটনের স্ত্রী ও তার তিন বছরের মেয়ে পাবে।

আদালতের বিশেষ পিপি গোলাম কিবরিয়া বুলু জানান, ২০১৮ সালের ১৩ জুন বিকালে যৌতুকের টাকা না পেয়ে কসাই পেশায় নিয়োজিত গৃহকর্তা লিটন মিয়া তার ভাইদের নিয়ে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে নির্যাতন করেন। এক পর্যায়ে লিটন মাংস কাটার চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রীর ডান হাত কবজিসহ বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। ওই সময় তার তিন ভাই দা, ছুরি ও ডেগার দিয়ে তাকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত করেন।

পরে তাকে মূমুর্ষূ অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে পাঠায়।

ওই ঘটনায় জেলা হাসপাতাল ও ঢাকায় চিকিৎসা শেষে ওই বছরের ৩ জুলাই গৃহবধূ বাদী হয়ে লিটন মিয়া এবং তার চার সহোদর ভাই ও আত্মীয় শফিকুল ইসলামকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।

পিপি বলেন, ৬ জুলাই ঝিনাইগাতী থানায় নিয়মিত মামলা রেকর্ড হয়; দুদিন পর প্রধান আসামি লিটন গ্রেপ্তার হন। পরে তিনি আদালতে জবানবন্দি দেন।

তদন্ত শেষে একই বছরের ৩১ অগাস্ট ঝিনাইগাতী থানার তৎকালীন ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস শুধু লিটন মিয়া ও তার আত্মীয় শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগপত্র দাখিল করেন বলে পিপি জানান।

পিপি আরও জানান, কিন্তু বিচারিক পর্যায়ে বাদীপক্ষের নারাজির পরিপ্রেক্ষিতে এজাহারনামীয় ছয় আসামির বিরুদ্ধেই অপরাধ আমলে গ্রহণ করে ট্রাইব্যুনাল। পরের বছরের ৩১ অক্টোবর লিটন মিয়ার ভাই রবি মিয়া ছাড়া অপর চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় চার সহোদরের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করা হয়; প্রমাণ না হওয়ায় শফিকুল ইসলামকে খালাস দেওয়া হয়।