শনিবার সন্ধ্যায় কলেজের সকল হল বন্ধ ঘোষণা করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে হল সুপার মো. কামরুল হাসান জানান।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা জানান, গত ৩ ডিসেম্বর রাতে আনন্দ মোহন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের ইউনিটটি জেলা ছাত্রলীগের অন্তর্গত ইউনিট হিসেবে বিবেচিত হবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এমন প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এরপর থেকে মহানগর ও জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়াতে থাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার দিনভর কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, হাতবোমা বিস্ফোরণ এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
মহানগর ছাত্রলীগের আহবায়ক নওশেল আহম্মেদ অনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আনন্দ মোহন কলেজের ছাত্রলীগ মহানগরের সঙ্গে একত্রে রাজনীতি করে আসছে। তারা রাজপথে শ্রম ঘাম ঝরিয়েছে।
“আমাদের প্রত্যাশা ছিল মহানগর ছাত্রলীগের নেতৃত্বেই আনন্দ মোহন কলেজ ছাত্রলীগ থাকবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এমন সিদ্ধান্তের পর ছাত্ররা হতাশ হয়ে আন্দোলন করছে।”
তবে এই আন্দোলনের সঙ্গে মহানগর ছাত্রলীগ জড়িত নয় বলে তার ধাবি।
সাধারণ ছাত্রদের পাশে তার ‘থাকা উচিত ছিল’ বলে তিনি মনে করলেও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ‘সম্মানার্থে’ তিনি আন্দোলনে অংশ নেননি বলে জানান।
নওশেল বলেন, সাধারণ ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে জেলা ছাত্রলীগ ককটেল [হাতবোমা] ফোটানোসহ হামলা করেছে। এ ঘটনায় দুই একজন আহতও হয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আল আমিন হোসেন বলেন, “ময়মনসিংহ শহরে ছাত্রলীগের বসার মতো কোনো জায়গা নেই। বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ আমাদের আওতায় আনন্দ মোহন কলেজ ছাত্রলীগের ইউনিটটি দিয়েছে।”
তবে এই বিষয়টাকে কেন্দ্র করে একটি পক্ষ উত্তেজনা ছড়াচ্ছে; বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করছে এবং ককটেল [হাতবোমা] ফোটানোসহ অনেকের উপর তারা হামলাও করেছে বলে তার ভাষ্য।
আনন্দ মোহন কলেজ ছাত্রাবাসের সুপার মো. কামরুল হাসান বলেন, কলেজের কিছু শিক্ষার্থীদের সাথে বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে মিছিল করে। এসময় অন্য আরেকটি গ্রুপের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
“এ অবস্থায় আমরা পুলিশকে অবগত করলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরবর্তী কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে আজ [শনিবার] সন্ধ্যায় কলেজের সকল হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত হল বন্ধ থাকবে বলে তিনি জানান।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ বলেন, নেতৃত্ব নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের উত্তেজনার মধ্যে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুইজন শিক্ষকসহ কয়েকজন আহত হয়েছে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।