কাটাখালীর মেয়র আব্বাসকে রিমান্ডে চায় পুলিশ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলীকে দশদিনের রিমান্ড চেয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Dec 2021, 08:39 AM
Updated : 2 Dec 2021, 08:56 AM

জাতির পিতার ম্যুরাল স্থাপনের বিরোধিতা করে মন্তব্যের জেরে বুধবার ভোরে (১ ডিসেম্বর) ঢাকার কাকরাইলের হোটেল রাজমনি ঈশা খাঁ থেকে আব্বাস আলীকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার আব্বাস আলীকে মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক শংকর কুমারের আদালতে তুলে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়ে আগামী রোববার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন।

একইদিন তার জামিন আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।

নৌকা প্রতীক নিয়ে টানা দুইবার রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালী পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত আব্বাস আলী পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

জাতির পিতার ম্যুরাল স্থাপনের বিরোধিতা করে কিছু মন্তব্যের একটি অডিও ভাইরাল হওয়ার পর গত সপ্তাহ তিনেক ধরে আলোচনায় থাকার পর তাকে গ্রেপ্তার করার কথা জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

সম্প্রতি ওই অডিও টেপ ফাঁস হওয়ার পর তাকে পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক পদের পাশাপাশি রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি থেকে আব্বাসকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই অডিও টেপে বলতে শোনা যায়, রাজশাহী সিটি গেইটে বঙ্গবন্ধুর যে ম্যুরাল করার নকশা দেওয়া হয়েছে, সেটা ‘ইসলামি শরিয়ত মতে সঠিক নয়’। এটা করতে দিলে ‘পাপ হবে’।

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে মন্তব্যের জেরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের পর কাটাখালীর পৌর মেয়রের ওই অডিও ভাইরাল হলে রাজশাহীতে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। তার অপসারণের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি অংশ।

এরপর রাজশাহীর নগরের রাজপাড়া, বোয়ালিয়া ও চন্দ্রিমা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তিনটি মামলা হয় আব্বাসের বিরুদ্ধে।

মেয়র আব্বাস প্রথামে দাবি করেছিলেন, ওই অডিও ‘এডিট করা’। তবে পরে ফেইসবুক লাইভে এসে তিনি স্বীকার করেন, ওই অডিও তিন-চার মাস আগের, ওই বক্তব্যও তার। মেয়র সেখানে বলেন, স্থানীয় একটি মাদ্রাসার বড় হুজুরের কথায় প্রভাবিত হয়ে তিনি বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল না রাখার বিষয়টি বলেছিলেন ‘কথাচ্ছলে’।

কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলতে থাকেন, যদি এটা এত বড় ভুল হয়ে থাকে, সেজন্য তিনি ক্ষমা চান। ‘চক্রান্ত হচ্ছে’ দাবি করে সবাইকে পাশে দাঁড়ানোরও অনুরোধ করেন।