বুধবার রাত দেড়টার দিকে শহরের চাঁনপুর রত্নাবতী গোমতি বেড়িবাঁধে গোলাগুলির এ ঘটনা ঘটে বলে কোতয়ালি থানার ওসি আনোয়ারুল আজিমের ভাষ্য।
শাহ আলম (২৮) সুজানগর বউ বাজার এলাকার মৃত জানু মিয়ার ছেলে। সোহেল ও হরিপদকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামির তালিকায় তার নাম ছিল ১ নম্বরে।
ওই মামলার বাদী সোহেলের ছোট ভাই সৈয়দ মো. রুমনের দাবি করেন, গুলিবিদ্ধ হরিপদ সাহাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি শাহ আলমকে ‘চিনতে পারার কথা’ বলে গেছেন। মাদক চোরাকারবারসহ বিভিন্ন অভিযোগে আরও মামলা রয়েছে শাহ আলমের নামে।
এর আগে এ মামলার আসামি সাব্বির হোসেন (২৮) ও সাজন (৩২) গত ২৯ নভেম্বর রাতে শহরের সংরাইশ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।
বুধবার রাতের ঘটনার বিবরণে ওসি আনোয়ারুল আজিম বলেন, ‘কয়েকজন অস্ত্রধারী’ গোমতী বেড়িবাঁধে অবস্থান করছে খবর পেয়ে কুমিল্লা জেলা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল রাতে সেখানে অভিযানে যায়।
“পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা গুলি চালায়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। দুই পক্ষের গোলাগুলিতে একজন সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ হয়।
“পরে স্থানীয়রা তাকে শাহ আলম বলে শনাক্ত করেন। গুলিবিদ্ধ শাহ আলমকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”
গোয়েন্দা পুলিশের এসআই পরিমল দাস বলছেন, এ অভিযানে পুলিশের দুজন সদস্যও আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার রাতের গোলাগুলির ঘটনায় কুমিল্লা কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন ওসি।
কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল ২০১২ ও ২০১৭ সালে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি প্যানেল মেয়র ছিলেন।
পরদিন সোহেলের ছোট ভাই সৈয়দ মো. রুমন কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ১১ জনের নাম উল্লেখ করে সেখানে অজ্ঞাতনামা আরও ১০ জনকে আসামি করা হয়।
তবে বাদী রুমন সেদিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “মাদকবিরোধী অবস্থান নেওয়ায় এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করেছে। এজাহারে তাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।”
ওই মামলার এজাহারে নাম থাকা পাঁচজনসহ মোট সাতজনকে এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও র্যাব। প্রধান আসামিসহ তিনজন পুলিশের সাথে ‘বন্ধুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন।
এজহারের ২ নমার আসামি সোহেল ওরফে জেল সোহেল, ১০ নম্বর আসামি সায়মন এবং ১১ নম্বর আসামি রনিকে পুলিশ এখনো ধরতে পারেনি।
তবে পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম তানভীর আহমেদ জানিয়েছেন।