মাদারীপুরে স্থায়ী ঠিকানায় গেল ২৫ সরকারি অফিস

এতদিন ভাড়া বাড়িতে থাকা মাদারীপুরের ২৫টি সরকারি অফিস নবনির্মত ভবনে নিজস্ব কার্যালয় পেয়েছে।

রিপনচন্দ্র মল্লিক মাদারীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2021, 02:16 PM
Updated : 1 Dec 2021, 02:16 PM

নতুন দশতলা এই একটি ভবনেই নাগরিকরা এসব দপ্তরের সেবা পাবেন।

মাদারীপুরের গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম খান জানান, প্রায় ৭০ কোটি টাকা খরচে দশতলা সমন্বিত সরকারি অফিস ভবনে বুধবার আটটি অফিস তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। পর্যায়ক্রমে বাকি অফিসগুলোও এই ভবনে চলে আসবে।

মাদারীপুর গণপূর্ত প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, শহরের শকুনী লেকের উত্তর পাড়ের পুরনো জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জমিতে ৬৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা খরচে ২০১৬ সালে দশতলা সরকারি সমন্বিত অফিস ভবনটি নির্মাণ কাজ শুরু করে, যা শেষ হয় চলতি বছরের অগাস্ট মাসে। এখানে ব্যাংক ও গণপূর্ত কন্ট্রোল রুম, ক্যাফেটোরিয়া, পোস্ট অফিস, জেলা নির্বাচন অফিস, প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র অফিস, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, জেলা সমবায় কার্যালয়, জেলা মার্কেটিং অফিস, জেলা তথ্য অফিস, একটি বাড়ি একটি খামার, ঔষধ তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়, জেলা পাট অধিদপ্তরের কার্যালয়, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট অফিস, জেলা সঞ্চয় অফিস, জেলা ক্রীড়া অফিস, জেলা সমাজ সেবা অফিস, জেলা শিশু একাডেমি, কাস্টমস এক্সসাইজ ও ভ্যাট বিভাগ, হিসাব তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়, সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসারের কার্যালয়, জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুারো, জেলা প্রশাসকের বিশেষ কার্যালয়, গণপূর্ত উপ-বিভাগীয় কার্যালয়কে এখানে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম খান বলেন, শুরুতে ১৯টি অফিসের আবেদনের ভিত্তিতে ভবনটি নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। পরে আরও ১১টি অফিস আবেদন করেছে।

“ইতোমধ্যে আমরা ২৬টি অফিসকে বরাদ্দ প্রদান করেছি। এদের ভেতর বরাদ্দ পাওয়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অফিসটিকে আমরা সরিয়ে দিচ্ছি। সেখানে অন্য একটি অফিসকে বরাদ্দ দেওয়া হবে। তবে ৩০টি অফিস আবেদন করলেও আমরা সবাইকে শেষ পর্যন্ত এই ভবনে বরাদ্দ দিতে পারব না। বর্তমানে ২৫টি অফিসই আপাতত এখানে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে।”

তিনি বলেন, এখন মাদারীপুর জেলার সকল নাগরিক একটি ভবনে এসেই অনেক অফিসের কাজকর্ম করতে পারবে। এটাই মূল উদ্দেশ্য ছিল।

জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. বাবুল হোসেন বলেন, তারা এতদিন শহরের বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া করে অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। এখন নতুন ভবনে নিজেদের একটি স্থায়ী ঠিকানা খুঁজে পেয়ে খুব ভাল লাগছে।

বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের মাদারীপুরের ব্যবস্থাপক কাজী ইব্রাহীম হোসেন বলেন, “আমাদের অফিসটি আগে পুরান বাজারের একটি মার্কেটে ভাড়া নিয়ে পরিচালনা করতাম। এখন সরকারিভাবে নিজেদের অফিস পেয়েছি। আমাদের গ্রাহকরা খুব সহজে এখানে এসে সেবা নিতে পারবে।”

একই ধরনের কথা বললেন জেলা সমবায় কর্মকর্তা আলম হোসেন।

তিনি বলেন, “আগে আমাদের ভাড়া অফিসটি ছিল খুব ছোট। কিন্তু এখানে অনেক বড় আয়তনের একটি অফিস পেয়ে খুব ভালো লাগছে। এত বড় অফিস আমরা পাব কখনও ভাবতে পারিনি।”

মাদারীপুর গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহ বলেন, “আমাদের দশতলা ভবনে ২৫টি অফিসকে ইতোমধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যার ভেতর ১ ডিসেম্বর থেকে আটটি অফিস তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। পর্যায়ক্রমে সব অফিসই এখানে এসে যাবে।”

মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার শশিকর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক লিটন জয়ধর বলেন, “মাদারীপুরের সরকারি সমন্বিত ভবনটিতে অনেকগুলো অফিস থাকায় আমাদের খুব সুবিধা হয়েছে। এক ভবনে গিয়ে অনেক অফিসের কাজ করতে পারব।”

একই ধরনের কথা বললেন মাদারীপুর শহরের বাসিন্দা বরুণ হালদার।