মঙ্গলবার রাঙামাটির মুখ্য বিচারিক হাকিম মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিনের আদালতে তাকে হাজির করা হয়।
রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মাহমুদা বেগম বলেন, কুমিল্লার ঘটনায় রাঙামাটিতে ইসমাইল নামে এক ব্যক্তি ফেইসবুকে উস্কানিমূলক পোস্ট দেন। ওই ঘটনায় রাঙামাটিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়।
“সেই মামলায় ইসমাইলকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল এবং রিমান্ডে সে স্বীকার করেছে কুমিল্লার ঘটনা থেকে উৎসাহিত হয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
“যেহেতু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে, তাই ইকবালকে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো [শ্যোন অ্যারেস্ট] হয়েছে।”
রাঙামাটি পুলিশ জানায়, কুমিল্লার দুর্গামণ্ডপে হনুমানের প্রতিমার উপর কোরআন শরিফ রাখার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাঙামাটিতে এক যুবক ফেইসবুকে উস্কানিমূলক পোস্ট দেন। ওই ঘটনায় রাঙামাটির কোতোয়ালি থানায় গত ১৪ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। মামলায় ইসমাইল নামে স্থানীয় এক যুবক গ্রেপ্তার হন।
রাঙামাটি কোতোয়ালি থানার ওসি কবির হোসেন জানান, ইকবালকে মঙ্গলবার সকালে কুমিল্লা কারাগার থেকে রাঙামাটি আনা হয়। আদালতে হাজিরা শেষে তাকে রাঙামাটি জেল হাজতে রাখা হয়েছে। বুধবার ফের কুমিল্লা নেওয়া হবে।
দুর্গাপূজার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার নানুয়া দীঘির পাড়ে দর্পণ সংঘের পূজামণ্ডপে হনুমানের মূর্তির কোলে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন শরিফ দেখে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। হামলা, ভাংচুর চালানো হয় অন্তত আটটি মন্দিরে।
এই ঘটনার পর তা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, চাঁদপুর, কক্সবাজার, ফেনী, রংপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।
এরপর কুমিল্লা পুলিশ নানুয়া দীঘির পাড়ের দুটি সিসি ক্যামেরার ভিডিও বিশ্লেষণ করে ইকবাল নামে ওই যুবককে শনাক্তের কথা জানায়।
একটি সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে এক যুবককে রাত ২টার পর স্থানীয় দারোগাবাড়ী শাহ আব্দুল্লাহ গাজীপুরী (রহ.) এর মাজার থেকে বেরিয়ে পূজামণ্ডপের দিকে যেতে দেখা যায়, তখন তার হাতে বই জাতীয় কিছু ছিল।
এরপর ৩টা ১২ মিনিটের দিকে তাকে পূজামণ্ডপের দিক থেকে ফিরে আসতে দেখা যায় আরেক ভিডিওতে, তখন তার হাতে ছিল একটি ‘গদা’।
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, ১৩ অক্টোবর ভোরে নানুয়া দীঘির ওই পূজামণ্ডপে থাকা হনুমানের মূর্তির কোলে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন রাখা ছিল। তখন হনুমানের মূর্তির হাতে থাকা গদাটি পাওয়া যায়নি।
এরপর ইকবালকে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলায় ইকবাল প্রধান আসামি।
পুরনো খবর