সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন: ক্ষতিপূরণ নেই আবাসন বাবদ

সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোনের জন্য অধিগ্রহণ করা জমিতে বসবাসকারীরা ‘আবাসন’ ও ‘ফসল’ বাবদ ক্ষতিপূরণ পাবেন না; ক্ষতিপূরণ বাবদ যে টাকা পাওয়া গেছে তা ভূমি মন্ত্রণালয়ে চলে যাবে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Nov 2021, 01:46 PM
Updated : 27 Nov 2021, 02:45 PM

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. মোবারক হোসেন বলেন, প্রকল্প এলাকায় খাসজমিতে অবৈধভাবে বসবাস করছেন তারা। তাদের কোনো ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা নয়।

তবে এর আগে তারা জমি বাবদ টাকা পেয়েছেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বলেন, “জমি বাবদ তাদের ক্ষতিপূরণ নয়, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে অনুদান দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না থাকায় আবাসন ও ফসলের ক্ষতির টাকা তাদের দেওয়া হয়নি।”

বঙ্গবন্ধু সেতুর কাছে যমুনা নদীর তীরে সিরাজগঞ্জ সদর ও বেলকুচি উপজেলার সাতটি মৌজা থেকে জমি অধিগ্রহণ করে গড়ে উঠছে বেসরকারি ‘সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন লিমিটেড’, যার প্রকল্প পরিচালক শেখ মনোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, মোট ১০৪১ দশমিক ৪৩ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে বসবাস করছে এক হাজার ২০৩টি পরিবার। প্রকল্প এলাকার ব্যক্তিগত জমি, খাসজমি বা সরকারি জমি, আবাসন ও ফসলের ক্ষতি বাবদ জেলা প্রশাসনের কাছে ৩০০ কোটি টাকা হস্তান্তর করেছেন তারা। জমি বাবদ অধিকাংশ টাকা বিতরণ করলেও আবাসন ও ফসলের ক্ষতিপূরণ বাবদ দেওয়া প্রায় ৪৭ কোটি টাকা এখনও বিতরণ করেনি জেলা প্রশাসন।এ কারণে প্রকল্প এলাকায় বসবাসকারীদের ঘরবাড়ি ও গাছপালা এখনও আগের অবস্থায় রয়েছে। প্রকল্পের পক্ষ থেকে ঘরবাড়ি ভেঙে নেওয়া বাবদ পরিবার প্রতি অতিরিক্ত ২০ হাজার করে টাকা দিতে চাইলেও তারা নিচ্ছেন না। এ কারণে প্রকল্পের কাজে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। 

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বলেন, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে জমি বাবদ তাদের অনুদান দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না থাকায় আবাসন ও ফসলের ক্ষতির টাকা তাদের দেওয়া যাচ্ছে না। এ টাকা ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

প্রকল্প এলাকায় বসবাসকারীরা জানান, আবাসন ও ফসল বাবদ ক্ষতিপূরণ পেলে তারা চলে যাবেন। প্রকল্প এলাকা বালি দিয়ে ভরাট করায় এবং বসতবাড়ির চারপাশে মাটি ভরাট হওয়ায় ধুলোবালির কারণে তারা এখানে কষ্টের মধ্যে আছেন। রাস্তায় চলাচলেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। কিন্তু আবাসন ও ফসল বাবদ ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় তারা যেতে পারছেন না।

এই অধিবাসীদের পুনর্বাসনের জন্য প্রকল্প এলাকার দক্ষিণ পাশে ৫০ একর জায়গা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক শেখ মনোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্তরা পরিবারপ্রতি সাড়ে পাঁচ শতক জায়গা পাবেন। সেখানে মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল ও বাজার-ঘাট গড়ে তোলা হবে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে পর্যাক্রমে প্রায় সাতশ ছোট-বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের জায়গা হবে। কর্মসংস্থান হবে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সিরাজগঞ্জসহ উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতির চাকা গতিশীল হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।