ভোটে ‘বিদ্রোহী’ স্ত্রী, দলে শাস্তি পেলেন মন্ত্রীর ভাই

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীকে সমর্থন করায় দলীয় পদ হারিয়েছেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ছোট ভাই।

লালমনিরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2021, 07:06 PM
Updated : 24 Nov 2021, 07:13 PM

মন্ত্রীর ভাই মাহবুবুজ্জামান আহমেদ লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদে ছিলেন।

মাহবুবুজ্জামানের স্ত্রী সাজেদা জামান তুষভাণ্ডার ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তিনি উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে ছিলেন।

স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই আওয়ামী লীগের দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

তাদের পাশাপাশি দলীয় পদ হারিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বিপ্লব। তিনি মদাতী ইউনিয়নের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হয়েছেন।

লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তাদের তিনজনের পদ কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিলের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। যার অর্থ তারা বহিষ্কৃত হতে যাচ্ছেন।

তাদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশনা অনুযায়ী পদ থেকে অব্যাহতি প্রদানের পাশাপাশি সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানানো হয়েছে।

অব্যাহতিপ্রাপ্তদের কাছে দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা বলেন, এ বিষয়ে তারা কিছু জানেন না।

স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের কোনো প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।

তুষভাণ্ডার ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী করেছে নূর ইসলাম আহমেদকে। সেখানে মোটর সাইকেল প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন সাজেদা। মদাতী ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী হয়েছেন আবদুল কাদের। সেখানে বিদ্রোহী হয়ে লড়ছেন বিপ্লব।

জেলা কমিটির ওই সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে জেনেছেন বলে কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মতিয়ার রহমানের স্বাক্ষর করা চিঠিতে বিদ্রোহী প্রার্থীসহ তাদের পক্ষে কাজ করা ১০ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বিদ্রোহীদের পক্ষে কাজ করায় কালীগঞ্জের সাত নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা হলেন- গোড়ল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন, চলবলা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড সভাপতি খবির উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ আলী প্রামাণিক, কাকিনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক, কাকিনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফেরাজুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান বিপ্লব এবং দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক।

চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে নাকাল অবস্থায় পড়ার পর কেন্দ্র থেকে কঠোর বার্তা দেওয়া হয়। এরপর বিভিন্ন স্থানেই বহিষ্কার চলছে।