আ. লীগ নেতার ‘চাঁদা দাবি’, ঢাকা-রাঙ্গাবালী লঞ্চ বন্ধ

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে এক আওয়ামী লীগ নেতা চাঁদার দাবিতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর-লুটপাট করেছেন বলে অভিযোগ তুলে রাঙ্গাবালী-ঢাকা পথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন মালিকেরা।

পটুয়াখালী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2021, 08:40 AM
Updated : 23 Nov 2021, 08:40 AM

দশমিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দশমিনা ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ইকবাল মাহামুদ লিটনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগে মামলা হয়েছে। মামলা করেছেন ওই পথে চলাচলকারী এমভি জাহিদ লঞ্চের ক্যাশিয়ার মো. ইউসুফ।

দশমিনা থানার ওসি মো. মেহেদী হাসান জানান, শনিবার তাদের থানায় মো. ইউসুফ বাদী হয়ে ইকবাল মাহমুদ লিটনকে প্রধান আসামি করে এই মামলা করেন। তাছাড়া আরও ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে মামলায়। মামলার পর পুলিশ ইতোমধ্যেই দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে।

অন্য আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে লঞ্চ বন্ধ করেন মালিকেরা।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ইকবাল মাহমুদ লিটন ১৭ নভেম্বর এমভি জাহিদ লঞ্চের মালিক জাহিদ মেলকারকে চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়ে আউলিয়াপুর লঞ্চঘাট পন্টুনে নামান। এরপর তার কাছে আউলিয়াপুর, বাঁশবাড়িয়া ও হাজির হাট লঞ্চঘাটে সুপারভাইজার নিয়োগের জন্য দাবি করেন। তখন জাহিদ মেলকার জানান, এসব ঘাটে লঞ্চের সুপার ভাইজার নিয়োগ দেওয়া আছে। এতে লিটন ক্ষুব্ধ হয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তখন মালিক তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে লঞ্চটি দীর্ঘসময় ঘাটে আটক করে রাখেন লিটন ও তার সঙ্গীরা। পরে যাত্রীদের অনুরোধে লঞ্চ ছেড়ে দেওয়া হয়। এর দুই দিন পর লঞ্চটি আবার ওই লঞ্চঘাটে যাত্রী তুলতে নোঙ্গর করলে আসামিরা দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে লঞ্চে উঠে ১০ জন কর্মচারীকে পিটিয়ে জখম করে। তারা লঞ্চের সিন্দুক থেকে তিন লাখ ৬৫ হাজার ৬২০ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। হামলায় গুরুতর আহত লঞ্চকর্মী আব্দুস সত্তার (৪২) ও মো. মাহাবুবকে (২৮) পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং মো. জহিরকে (৩২) বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তাছাড়া হামলাকারীরা এ সময় লঞ্চে ভাঙচুর চালায়।

লঞ্চ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন জেলার রাঙ্গাবালী, দশমিনা, গলাচিপা ও বাউফল উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ।

পটুয়াখালী-৩ (দশমিনা-গলাচিপা) আসনের সংসদ সদস্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এস এম শাহজাদা সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ইতোমধ্যে লঞ্চ মালিক ও বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছেন। লঞ্চ মালিকেদরে অনুরোধ করেছেন জনগণকে তারা যেন জিম্মি না করেন।

“এখনও আলোচনা চলছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান হবে।”

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইকবাল মাহামুদ লিটন। তিনি ঘটনাটিকে মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।