‘১৫ বছর’ শেকলবন্দি চাঁদপুরের হাফেজ

গত ১৫ বছর ধরে শেকলবন্দি হয়ে জীবন পার করছেন চাঁদপুরের এক হাফেজ; যিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন বলে পরিবার জানিয়েছে।

চাঁদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Nov 2021, 10:34 AM
Updated : 22 Nov 2021, 10:35 AM

জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের ভোটাল গ্রামের ৩৫ বছর বয়সী এই ব্যক্তির চিকিৎসার জন্য সরকারি সাহযোগিতা চেয়েছে তার পরিবার।

তার মায়ের ভাষ্য, “মৃত্যুর পর হাফেজ সন্তানের ইমামতিতে জানাজা হবে—পরিবারের এমন চিন্তা থেকে ছেলেকে বাড়ির পাশের জয়শ্রী রাহমানিয়া আরাবিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসায় হাফেজি পড়াই। পড়াশোনায় খুব মনোযোগী ছিল সে।

“হাফেজি পড়া শেষ করার পর কয়েক মাসের মধ্যে সে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। হারিয়ে ফেলে মানসিক ভারসাম্য। পরিবারের সামর্থ্য অনুযায়ী জমিজমা বেচে তার চিকিৎসা করানো হলেও ঠিক হয়নি। গত ১৫ বছর ধরে বসতঘরে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। বেঁধে না রাখলে হারিয়ে যায়। আসবাবপত্র ভেঙে ফেলে। সময়-অসময় এদিক-সেদিক চলে যায়। পরিবারের পক্ষে সারাক্ষণ তাকে দেখে রাখা সম্ভব হচ্ছিল না।“

মা বলেন, “ছেলের এমন অবস্থায় মা হয়ে আমি নিজে রাতে ঘুমাতে পারি না। সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়।”

অর্থের অভাবে এখন আর ছেলের চিকিৎসা করাতে পারছেন না বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, “আমার স্বামী শ্রমিকের কাজ করতেন। কয়েক বছর আগে মারা গেছে। এখন ঠিকমত সংসার চালানোই সম্ভব হচ্ছে না। ছেলের চিকিৎসা করব কীভাবে?”

তিনি ছেলের চিকিৎসায় সরকার ও বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

জয়শ্রী রাহমানিয়া আরাবিয়া হাফিজিয়া মাদ্রসার প্রধান মহসিন মিয়া বলেন, তারা মাদ্রাসার পক্ষ থেকে সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করেছেন। এখন আল্লাহর রহমতের পাশাপাশি সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।

গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল গনি বাবুল পাটওয়ারী বিষয়টি অবগত। তিনি তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন।