সিলেট বিভাগে পরিবহন ধর্মঘট, ভোগান্তিতে মানুষ

পরিবহন শ্রমিকদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার ও সড়কে পুলিশের ‘হয়রানি’ বন্ধসহ পাঁচ দফা দাবিতে সিলেট বিভাগে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Nov 2021, 04:31 AM
Updated : 22 Nov 2021, 04:59 AM

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সিলেট বিভাগীয় কমিটির ডাকা ধর্মঘটের কারণে সোমবার ভোর থেকে দূরপাল্লা ও স্বল্পপাল্লার কোনো বাস ছাড়েনি। পণ্যবাহী গাড়িও বন্ধ রয়েছে।

রোবাবার দুপুরে অনুষ্ঠিত এক জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয় কমিটি। হঠাৎ গাড়ি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন এসএসসি পরীক্ষার্থী ও সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটকেরা।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সিলেট বিভাগীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু সরকার বলেন, পরিবহন শ্রমিকদের পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সিলেটে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ও প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন তারা। সেই সময় শেষ হলেও কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিভাগজুড়ে ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছে।

পাঁচ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সিলেট বিভাগে কোন ধরনের পরিবহন চলবে না বলে জানান তিনি।

পরিবহন শ্রমিকদের দাবিগুলো হচ্ছে- সিলেট জেলা অটোটেম্পো, অটোরিকশা চালক শ্রমিক জোটের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা এবং ‘প্রহসনের নির্বাচন’ ও ‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়’ ঘোষিত কমিটি বাতিল করা ও মনোনয়ন ফি বাবত আদায়কৃত সকল টাকা ফেরত দেওয়া; সিলেটের আঞ্চলিক শ্রম দপ্তরের উপ-পরিচালককে প্রত্যাহার করা।

এছাড়া সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দের উপর দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার; ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের সকল প্রকার হয়রানি বন্ধ করা; শেরপুর, শেওলা, লামাকাজী, শাহপরাণ ও ফেঞ্চুগঞ্জ সেতু থেকে টোল আদায় বন্ধ এবং চৌহাট্টাসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে কার, মাইক্রোবাস, লেগুনা, অটোরিকশসহ সকল প্রকার গাড়ির পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা।

সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকারিয়া আহমদ বলেন, এসব দাবি আদায়ে দীর্ঘদিন ধরে তারা আন্দোলন করে আসছেন। বার বার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েও পরে প্রশাসনের সাথে বৈঠক করে সমাধানের আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন।

“এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপিও দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই কর্মবিরতির পথ বেছে নিতে হয়েছে।”

ধর্মঘটের মধ্যে সকাল থেকে নগরীর কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল,কুমারগাঁও বাস স্টেশন, হুমায়ুন রশিদ চত্বর, চণ্ডিপুর, তেতলী বাইপাস ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিভিন্ন বাজারে পরিবহন শ্রমিকদের পিকেটিং করতে দেখা গেছে।

ওসমানীনগরের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর অভিভাবক আজহারুল ইসলাম এ পরিস্থিতির জন্য প্রশাসন-শ্রমিক দুপক্ষকেই দুষলেন।  

তিনি বলেন, “কথায় কথায় পরিবহন ধর্মঘটের নামে নৈরাজ্য চালাচ্ছে শ্রমিকরা। প্রশাসনেরও দায় আছে। সমস্যাগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করলে সাধারণ মানুষের এত ভোগান্তিতে পড়তে হয় না “

হঠাৎ গাড়ি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পর্যটন নগরী সিলেটে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বেড়াতে আসা পর্যটকরাও আটকা পড়েছেন।

ঢাকা থেকে আসা মো. আরিফ বলেন, “শাহজালালের মাজার জিয়ারতের জন্য সিলেট এসেছিলাম। এখন ধর্মঘটের কারণে যেতে পারছি না।“