এই ঘটনায় সোমবার রাজবাড়ি সদর থানায় ‘জেকা বাজার’ নামের এই প্রতিষ্ঠানের চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছেন প্রতিষ্ঠানটির বিপণন পরিচালক ইশানুর রহমান।
রাজবাড়ি সদর থানার ওসি শাহদত হোসেন জানান, সম্প্রতি ‘জেকা বাজার’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান ই-কমার্সের আড়ালে অবৈধভাবে ‘এমএলএম’ ব্যবসা করছিল। তা নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে রাজবাড়ি শহরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কাছে নান্নু টাওয়ারে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালায় প্রশাসন। সেখানে নকল পণ্য বিক্রি ও ই-কমার্স ব্যবসার বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় তাদের জরিমানা ও প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়।
“বৈধ কাগজপত্র প্রদর্শনের জন্য নির্ধারিত সময়সীমা বেঁধে দেয় প্রশাসন। এরই মধ্যে বৈধ কাগজপত্র প্রদর্শনে ব্যর্থ হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয় রাজবাড়ির স্থানীয় প্রশাসন।”
ওসি আরও বলেন, লাখে ৩০ হাজার টাকা মুনাফা দেওয়ার প্রলোভনে রাজবাড়ি, পাবনা, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর ও মানিকগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার গ্রাহকদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে জেকা বাজার সংশ্লিষ্টরা। প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালালে তাদের কারসাজির বিষয়টি গ্রাহকরা জানতে পারে।
“তখন থেকেই গ্রাহকদের টাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাবের উল্লাহ খান জাবেরসহ তার সহযোগীরা আত্মগোপনে চলে যায়।”
তাদের খোঁজ না পেয়ে গ্রাহকদের চাপে ওই প্রতিষ্ঠানেরই বিপণন পরিচালক ইশানুর রহমান সোমবার দুপুরে মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর পুলিশ জেকা বাজারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারে কাজ করছেন বলে ওসি জানান।
জেকা বাজারে বিনিয়োগ করা একাধিক গ্রাহক বলেন, তারা কিস্তিতে ঋণ নিয়ে জেকা বাজারে বিনিয়োগ করেছেন। এক হাজার টাকার বিনিময়ে তারা তাদের একটি করে আইডি দিয়েছে। ওই আইডি থেকে প্রতিদিন ভিডিও দেখলে ভিডিও প্রতি তারা ১০ টাকা করে পেতেন। প্রত্যেক মাসে তারা ভালোই টাকা পেয়ে আসছিলেন।
গত ২ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের পর আর টাকা পাননি বলে তাদের অভিযোগ।
যাদের তারা টাকা দিয়েছিলেন তারা সবাই পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজবাড়ী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, রাজবাড়ী ও পাবনাসহ কয়েকটি জেলায় ‘জেকা বাজার লিমিটেড’ নামে অবৈধ একটি এমএলএম কোম্পানি প্রায় ২৫ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে। অধিক মুনাফার লোভে কিছু গ্রাহক ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত এখানে বিনিয়োগ করেছেন।