সোমবার সুবিদখালী সরকারি রহমান ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা বিষয়ের (বিষয় কোড-১৫৩) নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষায় এই ঘটনা ঘটে।
মির্জাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা. তানিয়া ফেরদৌস জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে কেন্দ্র সচিবকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
সুবিদখালী রোকেয়া খানম বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. গোলাম সরোয়ার সাংবাদিকদের বলেন, তার প্রতিষ্ঠানের ২৫ জন শিক্ষার্থী ওইদিন ওই বিষয়ে অংশ গ্রহণ করেছে। একই কেন্দ্রের অধীনে দুটি ভেন্যু হচ্ছে আরকে বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সুবিদখালী রহমান ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
“এর মধ্যে একটি কেন্দ্রে ভুল কোডের প্রশ্নপত্র সরবরাহ করার কারণে দুবার পরীক্ষা দিতে হলো শিক্ষার্থীদের। এতে পরীক্ষার ফলাফলেও প্রভাব পড়বে।”
পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, সুবিদখালী সরকারি রহমান ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৯১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেন। সকাল ১০টায় বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা বিষয়ের পরীক্ষা শুরু হয়।
ওই কেন্দ্রে সেটকোড-৩ এর প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও ভুলে পরীক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হয় সেটকোড-১ এর প্রশ্নপত্র।
পরীক্ষা প্রায় শেষের দিকে কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের ভুলটি ধরা পড়লে তড়িঘড়ি করে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভুল প্রশ্নপত্র এবং খাতা তুলে নিয়ে পুনরায় নির্ধারিত কোডের (সেট কোড-৩) প্রশ্ন সরবরাহ করে সময় বাড়িয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়।
পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থী মো. আরিফুল ইসলাম, মো. আব্দুল্লাহ, তারিকুল ইসলাম উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, পরীক্ষা প্রায় শেষ খাতা জমা দেওয়ার মুহূর্তে তাদের খাতা বাতিল করে নতুন করে প্রশ্নপত্র দিয়ে পুনরায় পরীক্ষা নিয়েছে দায়িত্বরত শিক্ষকরা।
তাদের কেউ কেউ বলছে প্রথমবার ভালো পরীক্ষা হয়েছিল; দ্বিতীয়বার নতুন প্রশ্নে পরীক্ষা বেশি ভালো হয়নি।
অভিভাবক মো. হানিফ মুন্সী সাংবাদিকদের বলেন, “আমার মেয়ের পরীক্ষা ১০টায় শুরু হয়ে সাড়ে ১১টায় শেষ হওয়ার কথা; কিন্তু সাড়ে ১২টা বেজে গেছে কিন্তু হল থেকে বের হচ্ছে না। শুনলাম একই পরীক্ষা নাকি দুবার নেওয়া হচ্ছে।”
এ বিষয়ে কেন্দ্র সচিব আব্দুল জলিলকে ফোন করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি ব্যস্ত আছেন এবং পরে কথা বলবেন বলে সংযোগ কেটে দেন। পরে আর তিনি ফোন ধরেননি।
মির্জাগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় জানায়, উপজেলায় ২০২১ সালে এসএসসি পরীক্ষায় সর্বমোট ২ হাজার ২১২ জন, দাখিল পরীক্ষায় ৫১৮ জন এবং ভোকেশনাল থেকে ২২৪ জন পরীক্ষার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে কাঁঠালতলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে ৬২৯ জন এবং সুবিদখালী সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে ৮৪১ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করছেন।
মির্জাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা. তানিয়া ফেরদৌস বলেন, “সেট কোডের বিষয়টি সম্পূর্ণ কেন্দ্র সচিবের। আমার কাছে সেট কোড আসে আমি ওটাকে পাঠিয়ে দেই। এই বিষয়টার সম্পূর্ণ দায়ভার তার (কেন্দ্র সচিবের)। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছি।”