ফেরি সঙ্কটে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে ভোগান্তি

ফেরি সঙ্কটের কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌরুটে ভোগান্তি লেগেই আছে।

ফরিদপুর  প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Nov 2021, 07:28 AM
Updated : 14 Nov 2021, 09:27 AM

এ রুটে চলাচলকারী যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহনগুলোকে ঘাট থেকে ফেরি পর্যন্ত যেতে অপেক্ষা করতে হয় লম্বা সময়। ফলে গাড়ির দীর্ঘ জটে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চালক ও যাত্রীদের।

রোববার গোয়ালন্দ ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ঘাটে  জিরো পয়েন্টে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের চার কিলোমিটার এলাকা জুরে সারি সারি যাত্রীবাহী গাড়ি ও পণ্যবাহী ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে ফেরিতে ওঠার জন্য। 

প্রতিটা যাত্রীবাহী পরিবহনকে আট থেকে নয় ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। আর পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে দুই থেকে তিন পর্যন্ত। দীর্ঘ সময় পথে না খেয়ে, না ঘুমিয়ে থাকতে হয় যাত্রী-চালকদের। অনেক চালক ঘুমিয়ে নিচ্ছেন জটে বসেই।   

গত তিন-চার ধরে ঘাট এলাকায় এ ভোগান্তি হচ্ছে বলে বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট শাখর ব্যবস্থাপক জামাল হোসেন জানান।

মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ নামের এক যাত্রী বলেন, তিনি শনিবার রাত একটায় দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে এসেছেন। রোববার সকাল ৯টায় তার গাজীপুরে থাকার কথা ছিল। কিন্তু ফেরিতেই উঠতে পারেননি। সারারাত কাটিয়েছেন না ঘুমিয়ে।

খুলনা থেকে ঢাকাগামী আরেক যাত্রী ইকরামুল বলেন, “আমার ভাইয়ের অপারেশন। ভাইকে দেখতে ঢাকায় যাচ্ছিলাম। কিন্তু শনিবার রাত একটা থেকে আটকে আছি ফেরি ঘাটে। সঙ্গে থাকা শিশু বাচ্চাটা বমি করে ক্লান্ত হয়ে গেছে।”

বিনা রাণী জানায়, “সারা রাত বাসে বসে আছি। পুরুষেরা মাঝে মাঝে বাস থেকে নেমে হাঁটাহাটি করছে। কিন্তু আমাদের সে ব্যবস্থা নেই। সেই সঙ্গে ঘাট এলাকায় কোনো শৌচাগারের ব্যবস্থা না থাকায় ভোগান্তি চরমে উঠেছে।”

ট্রাক চালক হোসেন আলী জানায়, “দুই দিন ঘুমাই না। গাড়িতেই বসে থাকি স্টিয়ারিং ধরে। একটু আগাই আবার বন্ধ করি। এভাবেই সারা রাতে তিন কিলোমিটার পথ পাড়ি দিছি। কখন যেন গাড়িতেই ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না।”

কামাল হোসেন নামে আরেক ট্রাক চালক বলেন, “ফেরি তো চলছেই না। যে কারণে এই ভোগান্তি। দুই দিন ধরে আটকে আছি। সময় মত ঘুম, খাওয়া, গোসল নাই। যে কোন সময় অসুস্থ হয়ে পড়ব। ”

এ বিষয়ে দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক জামালের ভাষ্য, “এই রুটে ছোট বড় মিলে ২০ ফেরি রয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারপার করা হচ্ছে। বাকি ফেরিগুলো যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেরামতের জন্য পাঠানো হয়েছে। ফলে ঘাট এলাকায় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।”

“নতুন করে ফেরি যোগ না হলে এই যানজট পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না। তারপরও মানুষের ভোগান্তি কমাতে যাত্রীবাহী পরিবহনগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারপার করা হচ্ছে।”