চাঁদপুর-ঢাকা লঞ্চে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি আদায়ের অভিযোগ

চাঁদপুর থেকে ঢাকায় চলাচলকারী বিভিন্ন লঞ্চে সরকারের নির্ধারিত ভাড়ার থেকে বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।

চাঁদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2021, 05:14 AM
Updated : 8 Nov 2021, 05:14 AM

ডিজেলের দাম বাড়ার প্রতিবাদে বাস মালিকদের পথ ধরে লঞ্চ মালিকরাও শনিবার থেকে থেকে ধর্মঘটে গিয়েছিলেন। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ সঙ্গে লঞ্চ মালিকদের বৈঠকে রোববার যাত্রীবাহী এই নৌযানের ভাড়াও ৩৫ শতাংশের বেশি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়।

চাঁদপুর থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী লঞ্চ যাত্রীদের অভিযোগ, সরকারের পক্ষ থেকে লঞ্চগুলোতে যেই পরিমাণ ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে তা মানা হচ্ছে না। সরকার লঞ্চের ভাড়া ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ বৃদ্ধি করা হলেও যাত্রীদের কাছ থেকে ‘৬০ ভাগ’ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।

সোমবার ভোর সাড়ে ৭টায় চাঁদপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় লঞ্চ ‘এমভি সোনার তরী’। এই লঞ্চের যাত্রী মো. আবদুস সামাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ব্যবসায়িক কাজে প্রায়ই সময় আমাকে ঢাকায় যেতে হয়। তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় লঞ্চগুলোতে ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে।

“সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী যেই পরিমাণ ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ার কথা, তা মানা হচ্ছে না। নেওয়া হচ্ছে তার চাইতে অতিরিক্ত ভাড়া। এতে করে মালামাল পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায়, জিনিসপত্রের দামও বৃদ্ধি পাবে।“

মো. ছিদ্দিকুর রহমান নামের আরেক লঞ্চযাত্রীর অভিযোগ, “তেলের দাম বাড়ল ২৩ ভাগ। সরকার লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধি করল ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ। অথচ আদায় করা হচ্ছে ৬০ ভাগ টাকা। আগে যেখানে ১০০ টাকা দিয়ে ঢাকা যেতাম, সেখানে নেওয়া হচ্ছে ১৫০ টাকা।”

চাঁদপুর লঞ্চঘাটে অপেক্ষমান যাত্রী মো. সোলায়মান বলেন, “আমাদের কথা কেউ ভাবে না। তেলের নাম না কমিয়ে উল্টো সাধারণ মানুষের উপর অতিরিক্ত ভাড়া চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন সরকারের পক্ষ থেকে লঞ্চগুলোতে যেই পরিমাণ ভাড়া নির্ধারণ করা হল তা মানা হচ্ছে না।”

সোমবার সোনার তরী লঞ্চ ঘুরে দেখা যায়, টিকেট কাউন্টারে নতুন ভাড়ার তালিকা লাগানো হয়েছে। লঞ্চের নিচ তলায় যেখানে আগে ভাড়া ছিল ১১৫ টাকা, ভাড়া বৃদ্ধির পর নতুন করে সেখানে ১৫০ টাকা লেখা হয়েছে। এছাড়া লঞ্চের অন্যান্য আসন ভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া যোগ করা হয়েছে।

এদিকে যাত্রীদের অভিযোগ অস্বীকার করে চাঁদপুর লঞ্চ-মালিক প্রতিনিধি মো. বিপ্লব সরকার বলেন, “নিয়ম মেনে লঞ্চগুলো সরকারের বেঁধে দেওয়া ভাড়াই আদায় করছে। যাত্রীদের কাছ থেকে কোনো ধরনের অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে না।”

চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএর উপ-পরিচালক কায়সারুল ইসলাম বলেন, চাঁদপুর থেকে সকল রুটে লঞ্চ চলাচল আবার স্বাভাবিক হয়েছে। লঞ্চগুলো যাতে যাত্রী সাধারণের কাছ থেকে বেশি ভাড়া আদায় করতে না পেরে, সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।

“কোনো লঞ্চ বেশি ভাড়া নিলে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

চাঁদপুর থেকে রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ ১৭টি রুটে প্রায় অর্ধশত লঞ্চ চলাচল করে। কম সময়ে নৌ-পথে যাত্রা আরামদায়ক হওয়ায় চাঁদপুর ছাড়াও পাশ্ববর্তী শরীয়তপুর, লক্ষ্মীপুর, ফেনী ও লাকসামসহ বিভিন্ন স্থানের লোকজন চাঁদপুরে লঞ্চে যাতায়াত করে।