উখিয়ার পাহাড়ে অস্ত্রের কারখানা, ৩ রোহিঙ্গা আটক

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ে ‘অস্ত্র তৈরির কারখানার’ সন্ধান পেয়েছে র‌্যাব।

নিজস্ব প্রতিবেদককক্সবাজার প্রতিনিধি ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2021, 04:03 AM
Updated : 8 Nov 2021, 07:48 AM

র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়ানের উপ-অধিনায়ক মেজর মেহেদী হাসান জানান, সোমবার ভোররাতে কুতুপালং এক্সটেনশন-৪ রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন গহীন পাহাড়ে ওই কারখানায় অভিযান চালিয়ে ১০টি আগ্নেঅস্ত্র এবং অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামসহ তিনজনকে আটক করেছেন তারা।

আটকরা হলেন- কুতুপালং ১-সি ক্যাম্পের জি-ব্লকের মৃত আজিজুর রহমানের ছেল মো. বায়তুল্লাহ (১৯), তার ভাই হাবিব উল্লাহ (৩২) এবং একই ব্লকের জাহিদ হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ হাছন (২৪)।

মেজর মেহেদী বলেন, “রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন ওই পাহাড়ে সংঘবদ্ধ একটি চক্র কারখানা গড়ে তুলে দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্র তৈরি করে আসছিল। সেখানে তৈরি অস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের কাছে সরবরাহ করা হত। এ খবর পেয়েই ভোররাতে সেখানে অভিযান চালায় আমাদের একটি দল।”

অভিযানের বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, “র‌্যাব সদস্যরা সেখানে পৌঁছালে সন্ত্রাসীরা তাদের দিকে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার জন্য র‌্যাব সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। এক পর্যায়ে র‌্যাব সদস্যরা ওই অস্ত্রের কারখানার নিয়ন্ত্রণ নেয়।”

এসময় কয়েকজন পালিয়ে যেতে পারলেও র‌্যাব সদস্যরা তিনজনকে আটক করে বলে জানান মেজর মেহেদী।

তিনি বলেন, ওই কারাখানা থেকে ১০টি বন্দুক এবং অস্ত্র তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জামা উদ্ধার করা হয়।

“আটকরা বলেছে, এসব অস্ত্র তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পকেন্দ্রিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর কাছে সরবরাহ করত।”

তাদের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান মেজর মেহেদী হাসান।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে শরণার্থী ক্যাম্পের আশপাশের এলাকায় সন্ত্রাসী হামলা বা সন্ত্রাসী কার্যক্রম বৃদ্ধি পেয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।”

উখিয়ার ওই কারখানা থেকে আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “তাদের থেকে তথ্যে পেয়েছি যে, এইসব অস্ত্র তাদের কাছ থেকে করা নিত, বা কারা অপব্যবহার করতো, কোথায় করত, এসব বিষয় আমরা জানতে পেরেছি।

ভবিষতে এরকম আরও অভিযান ওই এলাকায় চালানো হতে পারে বলেও ইংগিত দেন এই র‌্যাব কর্মকর্তা।

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে পরিণত হওয়া কক্সবাজারের এই ক্যাম্পগুলোতে প্রায়ই গোলাগুলি ও সংঘর্ষের খবর আসছে ইদানিং। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেগুলোকে ‘রোহিঙ্গা ডাকাত’ বা ‘চোরাকারবারিদের’ কাজ বলা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।

তবে গত সেপ্টেম্বরের শেষে কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ খুন হওয়ার পর ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আলোচনা শুরু হয়।

এর মধ্যেই গত ২১ অক্টোবর রাতে উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ১৮ নম্বর ময়নারঘোনা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক মাদ্রাসায় হামলা চালিয়ে ছয়জনকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।