হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে প্রশাসনের আশ্বাসে রোববার বিকাল সোয়া ৪টায় অবরোধ তুলে নেওয়া হয় বলে জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল্লাহ আনসারি জানান।
গুলিবিদ্ধ জাতীয় শ্রমিক লীগ কক্সবাজার জেলা সভাপতি জহিরুল ইসলাম সিকদারের মৃত্যুর খবর এসে পৌঁছালে রোববার দুপুর ১টার দিকে শ্রমিক লীগ নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী লিংকরোড স্টেশনে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, শ্রমিক লীগের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ মিছিলসহ বিক্ষোভ শুরু করলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আতংকে স্টেশনের সব দোকানপাট বন্ধ হয় এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের উভয়পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।
খবর পেয়ে পুলিশ ও র্যাবসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। পরে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালান তারা। কিন্তু শ্রমিক লীগের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ অব্যাহত রাখেন।
জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল্লাহ আনসারি বলেন, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে জহিরুল ইসলাম হত্যার সাথে জড়িতদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছেন। এ নিয়ে জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এরপরও প্রতিশ্রুতি মত ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার না হলে আবার প্রতিবাদ কর্মসূচী ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানান জেলা শ্রমিক লীগের এ নেতা।
কক্সবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পংকজ বড়ুয়া বলেন, সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শনকারী শ্রমিক লীগের নেতাকর্মিদের সঙ্গে পুলিশের কথা হয়েছে। তাদের ঘটনার ব্যাপারে জড়িত অপরাধীদের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মামলার এজাহার পাওয়ার পর পুলিশ জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাবে। এরপরও ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
সড়ক অবরোধ তুলে নেওয়ায় পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
জাতীয় শ্রমিক লীগ কক্সবাজার জেলা সভাপতি জহিরুল ইসলাম সিকদার (৫৩) কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষণি মুহুরী পাড়ার জামাল আহমদ সিকদারের ছেলে।
তার ভাই ঝিলংজা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কুদরত উল্লাহ সিকদার এ ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। আসছে ১১ নভেম্বরের নির্বাচনেও তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। শুক্রবার রাতে কুদরতের অফিসেই আক্রান্ত হন জহিরুল।
শুক্রবার রাতে দুই ভাই কুদরত উল্লাহ ও জহিরুল ইসলাম কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নির্বাচনী আলাপ করছিলেন। এ সময় একদল লোক মটরসাইকেলে এসে তাদের গুলি করে ও কুপিয়ে পালিয়ে যায়। এতে তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয়রা তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। কুদরত উল্লাহর অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় ওই দিন রাতেই তাকে চট্টগ্রাম পাঠানো হয়। শনিবার সকালে জহিরুল ইসলামের অবস্থাও আশংকাজনক হওয়ায় তাকেও চট্টগ্রাম পাঠানো হয়।
রোববার দুপুর পৌনে ১টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় জহিরুলের।