মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মাহফুজুর রহমান জানান, শুক্রবার রাতে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ধ্রুব জ্যোতি পালের আদালতে রবিউল হক (৩০) নামের ওই ব্যক্তি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার মধ্যম মটুয়া গ্রামের আবদুল গণির ছেলে রবিউলকে
গত ২৬ অক্টোবর রাতে ছাগলনাইয়া উপজেলার মধ্যম মটুয়া গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ২৭ অক্টোবর তাকে আদালতে তুলে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ।
শুনানি শেষে আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসান শুনানি শেষে দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুক্রবার বিকেলে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
পরিদর্শক মাহফুজুর বলেন, আদালতে কয়েক ঘণ্টার জবানবন্দিতে রবিউল গত ১৫ অক্টোবর ফেনীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির, দোকানপাটে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। কুমিল্লায় কোরআন অবমাননার প্রতিবাদ জানাতেই তারা মূলত ফেনী বড় মসজিদের সামনে জড়ো হয়েছিল।
“সেখানে তাদের সঙ্গে অজ্ঞাতপরিচয়ের আরও কিছু ব্যক্তি ছিল। তারা সবাই হামলায় জড়িত। এ সময় আদালতে তিনি তার সঙ্গে থাকা আরও কয়েকজনের নাম বলেছেন।”
মন্দিরে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ-র্যাব ও মন্দির কমিটির দায়ের করা পৃথক চার মামলায় তিন জনের নাম উল্লেখ করে মোট ৬৫৩ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে মাহফুজুর জানান।
থানা পুলিশ, র্যাব ও সিআইডি পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঘটনার দিন রাত থেকে ২৯ অক্টোবর শুক্রবার রাত পর্যন্ত গত ১৫ দিনে হামলায় জড়িত ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদের মধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে রবিউল হক (৩০), তৌহিদুল ইসলাম জিদান (১৬), গোলাম মোরশেদ খাঁনসহ (২০) চারজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া গ্রেপ্তারদের মধ্যে ৬ আসামি রিমান্ডে রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
দুর্গাপূজা চলাকালে কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে শুরু সহিংসতা শুরুর পর তা ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন এলাকায়।
এর প্রতিবাদে ১৬ অক্টোবর (শনিবার) ফেনীতে পূজা উদযাপন পরিষদের বিক্ষোভ মিছিলের প্রস্তুতির মধ্যে হামলা হয়। জেলা শহরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় হামলাকারীরা।
এরপর কয়েকটি মন্দির এবং হিন্দুদের মালিকানাধীন বেশ কিছু দোকানপাটে ভাংচুর, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয় সেই রাতে। সাত ঘণ্টা ধরে থেমে থেমে সংঘর্ষে ফেনী মডেল থানার ওসি নিজাম উদ্দিনসহ ৪০ জন আহত হন।