`মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের’ নাম নেই তালিকায়

মুক্তিযুদ্ধকালে এক `ক্যাম্প কমান্ডারের দায়িত্ব পালনকারীর’ নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তার এলাকার মানুষ।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Oct 2021, 03:20 PM
Updated : 28 Oct 2021, 03:20 PM

ইসমাইল হোসেন নামের এই ব্যক্তি সিরাজগঞ্জ শহরের বাসিন্দা হলেও বসবাস করেন যুক্তরাষ্ট্রে। মাঝেমধ্যে দেশে এলেও মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নাম না থাকার বিষয়টা তার জানা ছিল না।

তার নামটি মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে বৃহস্পতিবার মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছেন জেলার মুক্তিযোদ্ধারা। পাশাপাশি তারা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিও দেন।  

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশ ও মানববন্ধনে মুক্তিযোদ্ধা ছাড়াও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ

বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাবেক জেলা কমান্ডার সোহরাব হোসেন, গাজী শফিকুল ইসলাম শফি, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কে এম হোসেন আলী হাসান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদার, পৌর মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা, মুক্তিযোদ্ধা আশরাফুল ইসলাম জগলু চৌধুরী প্রমুখ।

সমাবেশে উপস্থিত ইসমাইল হোসেন বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। সিরাজগঞ্জ থেকে বেশ কয়েকজন সহযোদ্ধাকে সঙ্গে নিয়ে রৌমারী গিয়ে সেখানে ক্যাম্প স্থাপন করেছিলাম। ক্যাম্প কমান্ডারের দায়িত্ব পালনকালে শতশত মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করেছি। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সিরাজগঞ্জ এসে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের সমর্থন নিয়ে বেসামরিক মহকুমা প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেছি।”

স্বাধীনতার কয়েক বছর পর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস শুরু করলেও মাঝে মাঝে বাংলাদেশে আসেন জানিয়ে তিনি বলেন, “ধারণা ছিল আমার নাম গেজেটভুক্ত হয়েছে; কিন্তু আজও তা হয়নি।”

ইসমাইল হোসেন

মুক্তিযোদ্ধা হয়েও গেজেটে নাম না থাকায় তিনি হতাশা প্রকাশ করে অবিলম্বে তার নাম মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে প্রধানমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কে এম হোসেন আলী হাসান বলেন, ইসমাইল হোসেন ১৯৬৪ সালে সিরাজগঞ্জ বি এ কলেজ ছাত্রলীগের নির্বাচিত জিএস ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের এই সংগঠক মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কুড়িগ্রামের রৌমারী মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক এবং একাত্তর পরবর্তী সিরাজগঞ্জ জেলা পুনর্গঠনে মহকুমা প্রশাসকের (এসডিও) দায়িত্ব পালন করেন।

“অথচ সিরাজগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম সংগঠক সম্মুখযুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী এই বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী ইসমাইল হোসেনের নাম স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও সরকারি গেজেটভুক্ত হয়নি। এটা নিন্দনীয়।”

তিনিও অবিলম্বে ইসমাইল হোসেনের নাম গেজেটভুক্ত করার দাবি জানান।