বাগেরহাটে রোপা আমন ফলনে কৃষকের হাসি

উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে রোপা আমন ধানের মাঠে ব্যাপক ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ছড়াচ্ছে। বিস্তীর্ণ ধান ক্ষেত যেন সবুজ গালিচা। ফুল থেকে ধান এসেছে; এখনও সোনালী রং ধরেনি। পাকার পর কাটার সময় হলে এই সবুজ মাঠ চেহারা বদলে সোনালী রং ধারণ করবে।

বাগেরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Oct 2021, 12:55 PM
Updated : 25 Oct 2021, 01:12 PM

চলতি মৌসুমে আমন ধানে রোগ বালাইয়ের আক্রমণ না হলে ফলন ভালো হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। তবে কিছু কিছু এলাকায় আক্রমণ দেখা দেওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক।

পোকার আক্রমণ কমাতে কৃষি বিভাগের পরামর্শে ইতোমধ্যে কীটনাশক ছিটাচ্ছেন তারা। কীটনাশকে পোকার সংক্রমণ কমবে বলে আশা চাষিদের।

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মোতাহার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, চলতি রোপা আমন মৌসুমে জেলায় ৭৪ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় ৪০৫ হেক্টর জমিতে আবাদ কম হলেও ফলন আশানুরূপ হয়েছে।

শেষ পর্যন্ত কৃষক এই ফসল কেটে ঘরে তুলতে পারলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রায় কোনো ঘাটতি হবে না বলে আশা এ কর্মকর্তার।

সোমবার দুপুরে সরজমিনে দেখা গেছে, বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নের কালিয়া, কাশিমপুর, খেগড়াঘাট ও ডেমা গ্রাম মাঠের পর মাঠ সবুজে সবুজে ভরে গেছে।

কালিয়া গ্রামে মাহবুর মোল্লা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চলতি মৌসুমে অন্যের জমি বর্গা (হারি দিয়ে রাখা) নিয়ে ২০ বিঘা জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছি। আবাদ ভালো হয়েছে। এ বছর সারের দাম কম ছিল। কিন্তু সস্প্রতি ধানের ক্ষেতে পারুলি ও লেদা পোকা লেগে ধানের শীষ কেটে দিচ্ছে।

“কৃষি বিভাগ রোগের জন্য কীটনাশক ছিটানোর পরামর্শ দিয়েছে; তাদের দেওয়া পরামর্শে ধানে আমরা ওষুধ (কীটনাশন) ছিটাচ্ছি। এক বিঘা জমিতে খরচ পড়েছে ১৫/১৬ হাজার টাকা করে।”

তিনি বলেন, “এখন ক্ষেতে যে ফলন রয়েছে তা থাকলে আমাদের লাভ হবে। ধান পেকে যাওয়ার সময় এক ধরনের পোকার আক্রমণ হয়; সেটি যদি হয় তাহলে ধানের উৎপাদনে ঝুঁকি বাড়বে। এতে লোকসানের ঝুঁকি রয়েছে।”

কাশিমপুর গ্রামের নিরোধ মণ্ডল ও ও ধীরেন মণ্ডল বলেন, “এ বছর আমনের ধান মাঠ সবুজে সবুজে ভরে গেছে। ধানের গোছাও মোটামোটা হয়েছে। কিছু রোগবালাই চোখে পড়ছে, তবে সময়মত সার কীটনাশক ছিটাচ্ছি। সব ঠিক থাকলে বিঘা প্রতি ২৪ থেকে ২৫ মণ করে ধান পাব।”

কৃষি বিভাগ বলছে, উপকূলীয় জেলা বাগেরহাট। লবণাক্ততা, খরা, বন্যা অতিবৃষ্টিসহ নানা প্রতিকূলতাকে মোকাবেলা করে এখানে কৃষকদের ফসল উৎপাদন করতে হয়। জেলার শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও রামপাল উপজেলায় আমনের আবাদ সবচেয়ে বেশি হয়।

কৃষি কর্মকর্তা মোতাহার বলেন, আমনের মাঠে এ বছর বেশি বৃষ্টিপাতের কারণে পানির কোনো ঘাটতি ছিল না। মাঠে ধানের থোড় বেরিয়েছে। গাছের চেহারাও ভালো। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক মাঠে মনিটরিং করছেন। সমস্যা দেখা দিলে তারা কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছেন।

করোনাকালে যাতে খাদ্য ঘাটতি না হয় সেজন্য কৃষি বিভাগ সারসহ বিভিন্ন বিষয়ে কৃষকদের পাশে থেকে কাজ করছে বলে জানান তিনি।