সিআইডি কুমিল্লার পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ রেজওয়ান সাংবাদিকদের বলেছেন, “পুলিশ সদর দপ্তর থেকে মামলাটি সিআইডিতে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
দুর্গাপূজার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা শহরের নানুয়া দীঘির পাড়ে একটি পূজা মণ্ডপে ‘কোরআন অবমাননার’ কথিত অভিযোগ তুলে কয়েকটি মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়।
ঘটনার দিন কোতয়ালি মডেল থানার এসআই হারুন অর রশীদ বাদী হয়ে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা ও অবমাননার’ অভিযোগে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন।
এ মামলায় গত বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার ইকবাল হোসেনসহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত শনিবার সাত দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
মণ্ডপে কোরআন পাওয়ার জেরে চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী ও রংপুরসহ কয়েকটি জেলায় হিন্দুদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ে হামলা-ভাঙচুর হয়। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণহানিও ঘটে।
এর মধ্যে কুমিল্লার পুলিশ বুধবার নানুয়া দীঘির পাড়ের কয়েকটি সিসি ক্যামেরার ভিডিও বিশ্লেষণ করে কোরআন রাখার ঘটনায় ইকবালকে শনাক্ত করার এক দিন পর তাকে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওই মামলায় রিমান্ডে থাকা ইকবালকে সঙ্গে নিয়ে রোববার নানুয়া দীঘির পাড়ের অস্থায়ী পুজামণ্ডপে হনুমানের মূর্তি থেকে খোয়া যাওয়া গদাটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোববার রাত সাড়ে ১১টায় দারোগাবাড়ি মাজারের পাশে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি গিয়াস কামাল চৌধুরীর দোতলা বাড়ি চৌধুরী ভবনের সামনের একটি ঝোপ থেকে গদাটি উদ্ধার করা হয়।
কুমিল্লা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, গণমাধ্যমের কাছে সরবরাহ করা সিসিটিভি ভিডিওতে ইকবালকে কোরআন নিয়ে দর্পণ সংঘ পূজামণ্ডপে ঢুকতে এবং গদা হাতে বেরিয়ে মাজারের পাশে রাখতে দেখা গেছে।
সিসিটিভি ভিডিওতে সেদিন রাতে ২টার পর স্থানীয় দারোগাবাড়ী শাহ আব্দুল্লাহ গাজীপুরীর মাজার থেকে বেরিয়ে এক যুবককে পূজামণ্ডপের দিকে যেতে দেখা যায়, তখন তার হাতে বই জাতীয় কিছু ছিল।
এরপর ৩টা ১২ মিনিটের দিকে নানুয়াদিঘী পশ্চিম পাড় দিয়ে তাকে পূজামণ্ডপের দিক থেকে ফিরে আসতে দেখা যায় আরেক ভিডিওতে, তখন তার হাতে ছিল একটি ‘গদা’।
স্থানীয়দের ভাষ্য, ১৩ অক্টোবর ভোরে নানুয়া দীঘির ওই পূজামণ্ডপে থাকা হনুমানের মূর্তির কোলে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন রাখা ছিল। তখন হনুমানের মূর্তির হাতে থাকা গদাটি পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন