রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে চুল কাটার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Oct 2021, 01:16 PM
Updated : 22 Oct 2021, 01:16 PM

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান লায়লা ফেরদৌস হিমেল রেজিস্ট্রার মো. সোহরাব আলীর কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রেজারার আব্দুল লতিফ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলেছিলেন, “প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। শুক্রবার ঢাকা অফিসে সিন্ডিকেট সভায় সবার সামনে সেটি খোলা হবে এবং শিক্ষিকার বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

তবে সিন্ডিকেট সভা হয়েছে কিনা শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।  

এ বিষয়ে জানতে শুক্রবার ট্রেজারার আব্দুল লতিফের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

তদন্ত কমিটির প্রধান লায়লা ফেরদৌস হিমেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দুই দফা সময় নিয়েও তদন্ত কমিটির কাছে আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য উপস্থাপন করতে আসেননি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন।

সর্বশেষ সময় অনুযায়ী বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় তদন্ত কমিটির সামনে তার উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল। বিকাল ৩টা পর্যন্ত এই শিক্ষিকা না আসায় তার সঙ্গে কথা না বলেই প্রতিবেদন দেন বলে কমিটির প্রধান জানান।

তদন্তে চুল কাটার ঘটনার ‘সত্যতা মিলেছে’ বললেও বিস্তারিত জানাতে রাজী হননি লায়লা ফেরদৌস হিমেল।

গত ২৬ সেপ্টেম্বর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন নিজেই কাঁচি হাতে ১৬ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন বলে অভিযোগে ওঠে। সেই শিক্ষার্থীদের একজন ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিলে তাকে বকাঝকা করেন বলেও ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। এরপর ওই ছাত্র আত্মহত্যার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

ওই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনটি প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা ইয়াসমিন; যদিও ওই সময় তিনি শিক্ষার্থীদের চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

এই ঘটনায় ফারহানা ইয়াসমিনকে অপসারণের দাবিতে অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন চলমান অবস্থায় চুল কাটার একটি সিসিটিভি ফুটেজ ভাইরাল হয়।

এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ফারহানা ইয়াসমিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পাশাপাশি একটি বিজ্ঞপ্তিতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড থেকে তাকে বিরত থাকতে বলা হয়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অনশন তুলে নিয়ে প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে সামনে অবস্থান করতে থাকেন।

ওই অবস্থায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করেন।

আরও পড়ুন-