‘জোর করে’ বিয়ে দেওয়ায় চেয়ারম্যানসহ ৯ জন গ্রেপ্তার

ঠাকুরগাঁওয়ে এক যুবককে জোর করে বিয়ে দেওয়ার মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান, সাংবাদিক ও কাজীসহ নয় জনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2021, 01:07 PM
Updated : 21 Oct 2021, 01:07 PM

বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁওয়ের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আরিফুর রহমান এই আদেশ দেন বলে জানান বাদীপক্ষের আইনজীবী অনির্বান চৌধুরী। 

কারাগারে গিয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম, স্থানীয় সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ, কাজী আব্দুল কাদের, রিতা আক্তার, বাবুল হোসেন, মুসলিম উদ্দীন, আনছারুল, দারাসতুল্লাহ মুন্সি ও সারওয়ার হোসেন।

মামলার আরেক আসামি মো. সাজু পলাতক রয়েছেন।

মামলার নথির বরাতে আইনজীবী অনির্বান চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ২০১৯ সালের ৯ মে মামলার বাদী এক তরুণকে রাস্তা থেকে ধরে দুওসুও ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যান আসামিরা। সেখানে চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মামলার বাদীকে মারধর করে জোরপূর্বক এক তরুণীর সঙ্গে বিয়ের সম্মতি নেন। পরে কাজী আব্দুল কাদেরকে ইউনিয়ন পরিষদে আনা হয় এবং জোরপূর্বক ১৪ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯৯ টাকা কাবিননামায় তাদের বিয়ে দেওয়া হয়।

এরপর বাদীকে মামলার ২ নম্বর আসামি বাবুল হোসেনের বাড়িতে তিন দিন আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই ঘরের তালা খুলে দিয়ে বাবুল হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যান। তালা খোলা পেয়ে বাদীও ওই বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।

এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর বাদী নয় জনকে আসামি করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। একই বছরের ১৮ নভেম্বর বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশ অভিযোগপত্র দেয় ১০ জনের বিরুদ্ধে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী অনির্বান চৌধুরী বলেন, মামলার ধার্য নয় আসামির জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী আবেদুর রহমান। দুই পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আবেদন নাকচ করে ৯ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।  

আসামির আইনজীবী আবেদুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলাটি উদ্দেশ্যে প্রণোদিত। এ মামলায় আসামিপক্ষ জামিন পাওয়ার অধিকার রাখে বলেই আজ আমরা আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করি। কিন্তু আদালত জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।”

আদালতের জেল হাজতে চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্বইচ্ছায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে তাদের বিয়ে হয়। জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মামলা করে বাদী। আসলে জোর করে বিয়ে দেওয়ার কোনো ঘটনাই ঘটেনি।”

মামলার বাদী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার সাথে অন্যায় করা হয়েছে। আমাকে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে গিয়ে মারপিট করার পর জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।”