ঘটনার প্রতিবাদে চৌমুহনী পৌরসভা এলাকায় শনিবার ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বিক্ষোভ-মিছিল বের হয়েছে। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল।
বেগমগঞ্জ থানার ওসি মুহাম্মদ কামরুজ্জামান সিকদার বলেন, শনিবার সকাল ৬টার দিকে চৌমুহনী কলেজ রোডে ইস্কন মন্দির সংলগ্ন পুকুরে ভাসমান অবস্থায় প্রান্ত চন্দ্র দাস (২১) নামে এই ব্যক্তির লাশ পান তারা।
প্রান্ত চাটখিল উপজেলার সাহাপুরের বাসিন্দা। বিকেলে ময়নাতদন্তের পর চৌমুহনী শ্মশানে তার লাশ দাহ করা হয়।
শুক্রবার বিকেলে ওই পূজামণ্ডপে হামলা চালানো হলে ‘হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে’ একজনের মৃত্যু হয় বলে পুলিশ জানায়। তবে তিনি মারধরে মারা গেছেন বলে স্থানীয় হিন্দু নেতাদের অভিযোগ।
ইসকন মন্দিরের সহ-সভাপতি হরিপ্রেম প্রসাদ দাস বলেন, “শুক্রবার বিকেলে হামলাকারীরা মন্দিরে ও পূজামণ্ডপে অন্তত চারজনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। তাদের মধ্যে তিনজনকে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রান্ত নিখোঁজ ছিলেন। সকাল ৬টার দিকে মন্দিরসংলগ্ন পুকুরে তার লাশ ভেসে ওঠে।”
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশংকায় চৌমুহনী পৌরসভা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন। শনিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই আদেশ জারি করা হয়।
কিন্তু শনিবার ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত তারা এই প্রতিবাদে অংশ নেন। তারা প্রান্তর মরদেহ নিয়ে প্রধান সড়ক ছাড়াও বিভিন্ন মন্দিরের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
বেলা ২টার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন, আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণ, নোয়াখালীর ডিসি মো. খোরশেদ আলম খান, পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম।
মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, নোয়াখালীর ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন।
“আমরা চাই, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি মামলা দায়ের করলে সেই সেটা ভালো হবে, সুন্দর হবে। যতগুলো ঘটনা ঘটেছে প্রত্যেকটাকে কেন্দ্র করে মামলা হবে।”
তিনি বলেন, “লন্ডনের কাশিম বাজার কুটিরে বসে থাকা পতিত প্রধানমন্ত্রীর বিগড়ে যাওয়া সন্তানের ইন্ধনে, তার পরিকল্পনায় বাংলাদেশের ধর্মান্ধ ধর্মব্যবসায়ী চক্র এই অপকর্মটি করে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করেছে এবং এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি একটি সুপরিকল্পিত ঘটনারই অংশ। আমি সচেতন দেশবাসীর প্রতি বিনীত অনুরোধ করছি পরম ধৈর্য এবং সহনশীলতার সঙ্গে এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য।”