মাদ্রাসার ৬ ছাত্রের  চুল কর্তন: সেই শিক্ষক হাজতে

লক্ষ্মীপুরে মাদ্রাসার ছয় ছাত্রের চুল কেটে দেওয়া সেই শিক্ষককে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Oct 2021, 02:25 PM
Updated : 9 Oct 2021, 02:25 PM

শনিবার লক্ষ্মীপুর বিচারিক হাকিম তারেক আজিজ এই আদেশ এই আদেশ দেন।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়নে ‘হামছাদী কাজির দিঘীরপাড় আলিম মাদ্রাসা’র সহকারী শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির দশম শ্রেণির ছয় ছাত্রের চুল কেটে দেন। 

এ ঘটনার ১ মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও শুক্রবার ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।

এই ঘটনায় ভুক্তভোগী এক ছাত্রের মা বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন। এই মামলায় এই মাদ্রাসাশিক্ষককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। 

রায়পুর থানার ওসি আবদুল জলিল বলেন, ওই মাদ্রাসাশিক্ষককে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে লক্ষ্মীপুর বিচারিক হাকিম আদালতে সোপর্দ করা হলে তার পক্ষে জামিনের আবেদন করা হয়। আদালত ওই আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, হামছাদী কাজির দিঘীরপাড় আলিম মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা গত ১৮ সেপ্টেম্বর শ্রেণিকক্ষে অবস্থান করছিলেন। এক পর্যায়ে শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির দশম শ্রেণির (দাখিল) ছয় ছাত্রকে দাঁড় করিয়ে শ্রেণিকক্ষের সামনের বারান্দা আসতে বলেন।

তারা বের হলে এই শিক্ষক তাদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে কাঁচি দিয়ে একে-একে সবার মাথার টুপি সরিয়ে সামনের অংশের চুল কেটে দেন এলোমেলোভাবে।

এরপর ওই ছত্ররা লজ্জায় ক্লাস না করেই বেড়িয়ে যান।

এ ঘটনার ১ মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও শুক্রবার সকাল থেকেই ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে কয়েকজন ছাত্রকে কান্না করতে দেখা গেছে।

শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার বামনী ইউনিয়নের কাজিরদিঘীরপাড় এলাকা থেকে শিক্ষক মঞ্জরুল কবিরকে আটক করে পুলিশ। 

মঞ্জুরুল কবির হামছাদী কাজিরদিঘীরপাড় আলিম মাদরাসার সহকারী শিক্ষক ও বামনী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির। 

হামছাদী কাজির দিঘীরপাড় আলিম মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি রফিকুল হায়দার চৌধুরী বলেন, “এ ব্যাপারে শিক্ষকদের সচেতন করে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থী বা শিক্ষার্থীদের কোনো অভিভাবকই আমাদের কাছে এনিয়ে অভিযোগ করেনি।”

শিক্ষককে গ্রেপ্তার না করে ভবিষ্যতের জন্য সচেতন করে ছেড়ে দেওয়া যেত বলে তিনি মনে করেন।

লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, মামলাটির তদন্ত চলছে। ঘটনার সঙ্গে যারা যারা জড়িত তদন্ত করে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।