পাবনার সেই ইউপি চেয়ারম্যানের অর্থ আত্মসাতের ‘প্রমাণ পেয়েছে’ তদন্ত কমিটি

পাবনার সুজানগর উপজেলার দুলাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম শাহজাহানের বিরুদ্ধে দরিদ্রদের অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে তদন্ত কমিটি।

পাবনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Oct 2021, 07:03 AM
Updated : 5 Oct 2021, 08:27 AM

পাবনা জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন জানান, তদন্ত কমিটি দুলাই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মানবিক সহায়তার অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রতিবেদনটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালায়ে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।

এর আগে চলতি বছরের জুন মাসে এলাকার লোকজন সিরাজুল ইসলামের শাহজাহানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসকের বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। 

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, পবিত্র ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের জন্য জনপ্রতি ৫০০ টাকা করে বরাদ্দ দেন। দুলাই ইউনিয়নে ১৫০ জনে দুস্থ ও অসহায় ব্যক্তি এই বরাদ্দ পান।

চেয়ারম্যান শাহজাহান উক্ত বরাদ্দ থেকে জনপ্রতি ৫০ টাকা কেটে ৪৫০ টাকা করে দিয়েছেন; এবং এভাবে তিনি ৭৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে তাদের অভিযোগ।

পাশাপাশি ভিজিএফ কার্ডধারী বেশ কিছু দুঃস্থ ও অসহায়দের জন্য বরাদ্দ জনপ্রতি ৪৫০ টাকা না দিয়ে নিজস্ব লোক দিয়ে ভুয়া স্বাক্ষর ও টিপসহি দিয়ে মাস্টাররোল পূরণ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান।

পাবনার সুজানগরের দুলাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম শাহজাহান

এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাফিউল ইসলামকে আহ্বায়ক, উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার মনোয়ার হোসেন ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদাকে সদস্য করে কমিটি করা হয়।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক রাফিউল ইসলাম জানান, উপকারভোগী হুমায়ুন আহমেদ, বাসেদ আলী, রেজাউল ইসলাম, বাদশা শেখ, মোস্তফা প্রামাণসহ অন্তত ১৫ জনকে ঈদ উপহারের অর্থ কম দেওয়ার প্রমাণ তারা পেয়েছেন।

জনপ্রতি ৫০০ টাকার স্থলে তাদের ৪০০ টাকা ও ৪৫০ টাকা দেওয়া হয়েছে।

“পাশাপাশি আমিরন খাতুন, ময়নুল ইসলাম, নুর ইসলাম নামের উপকারভোগীর তালিকায় নাম থাকলেও তারা কোন টাকা পাননি। অথচ তাদের নামে টাকা উত্তোলনের প্রমান পেয়েছে তদন্ত কমিটি।”

রাফিউল বলেন, “আমরা অভিযোগকারী ও চেয়ারম্যানের বক্তব্য শুনেছি। চেয়ারম্যান ইউপি সচিবের সহায়তায় ভাতাভোগীদের ৫০০ টাকার স্থলে ৪৫০ টাকা করে বিতরণ করেছেন বলে ট্যাগ অফিসার ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম সাক্ষ্য দিয়েছেন।”

অপর ট্যাগ অফিসার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলছেন, ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম শাজাহান অভিযোগ অস্বীকার করলেও এর স্বপক্ষে কোন প্রমাণ দিতে পারেন নি।

“ফলে তার বিরুদ্ধে মানবিক সহায়তার অর্থ আত্মসাতের যে অভিযোগ উঠেছে, তা সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে।”

এ বিষয়ে সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রওশন আলী বলেন, তারা তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন। তিনি যাচাই বাছাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন।