রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে অবরোধ উঠল, তালা খুলল

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর শিক্ষার্থীদের চুল কাটার ঘটনায় ব্যবস্থা গ্রহণে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির আশ্বাসের পর সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শিথিল করে প্রশাসনিক ভবনের তালা খুলে দিয়েছেন।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Oct 2021, 09:27 AM
Updated : 2 Oct 2021, 09:27 AM

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র নাজমুল হাসান পাপন শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, আন্দোলনরত তিনজন শিক্ষার্থী শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, “তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিনকে স্থায়ীভাবে অপসারণ করা হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন। তার আশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমরা প্রশাসনিক ভবনের তালা খুলে দিয়েছি এবং অবরোধ তুলে নেওয়া হয়েছে।”

তবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে পাপন বলেন, “এ অবস্থায় অফিস চলাকালীন আমরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করব, কোনো শ্লোগান বা বক্তব্য দেওয়া হবে না।”

সোমবারের মধ্যে শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস বাস্তবায়ন না হলে মঙ্গলবার থেকে আবারও কঠোর আন্দোলন শুরু হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন পাপান।

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির দায়িত্ব পালনকারী কোষাধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সকল বিভাগের চেয়ারম্যান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিয়ে শনিবার সভা ডাকা হয়েছে। সভায় পরবর্তী করণীয় সর্ম্পকে সিদ্বান্ত গ্রহণ করা হবে।

“শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে বিধায় তাকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। স্থায়ীভাবে বহিস্কার করতে হলে নীতিমালা, সংবিধান ও নিয়মকানুন মেনে করতে হবে। এটা শিক্ষার্থীদের বুঝতে হবে, এজন্য সময় দিতে হবে।”

এদিকে আগামী সোমবারের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া সম্ভব বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির সভাপতি ও রবীন্দ্র অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেল।

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন সম্প্রতি নিজেই কাঁচি হাতে ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন বলে অভিযোগে ওঠে। সেই শিক্ষার্থীদের একজন আত্মহত্যার চেষ্টা করলে ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়।

এ পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিন প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা ইয়াসমিন; যদিও তিনি শিক্ষার্থীদের চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

ওই ঘটনায় ফারহানা ইয়াসমিনকে অপসারণের দাবিতে অনশন শুরু করে একদল শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের চলমান অবস্থায় চুল কাটার একটি সিসি টিভি ফুটেজ ভাইরাল হয়।

এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ফারহানা ইয়াসমিনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

পাশাপাশি একটি বিজ্ঞপ্তিতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার নির্দেশনা হয়।

এ অবস্থায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অনশন তুলে নিয়ে প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে সামনে অবস্থান করতে থাকে।

শুক্রবার রাতে একটি সংশোধনী বিজ্ঞপ্তিতে কর্তৃপক্ষ জানায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি; শুধু পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।