মুহিবুল্লাহ হত্যা: আরও দুই রোহিঙ্গা আটক

কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আরও দুজিন রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকও কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Oct 2021, 07:05 AM
Updated : 2 Oct 2021, 07:07 AM

শনিবার আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন দুই রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তারের কথা জানায়। এনিয়ে এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হল।

১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নইমুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শনিবার রাতে বিভিন্ন ক্যাম্পে অভিযান চালানো হয়। এসময় ওই দুই সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়।”

১ ইস্ট লম্বাশিয়া ক্যাম্প থেকে আব্দুস সালামকে (৩০) এবং ৮ ইস্ট কুতুপালং ক্যাম্প থেকে জিয়াউর রহমানকে (৩২) গ্রেপ্তার করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের দুদিন পর শুক্রবার কুতুপালংয়ের লম্বাশিয়া ক্যাম্পের এপিবিএন সদস্যরা সেলিম উল্লাহ (৩০) নামে এক রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করে। সেলিম লম্বাশিয়া ক্যাম্পের বাসিন্দা।

উখিয়া উপজেলার লম্বাশিয়া ক্যাম্পেই ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি পিস ফর হিউম্যান রাইটস অফিসে এই সংগঠনের চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহে (৪৮) গুলি চালিয়ে হত্যা করে একদল অস্ত্রধারীরা।

মুহিবুল্লাহর ভাই হাবিবুল্লাহর দাবি, খুনিরা ছিল ১৫-২০ জন। তাদের মুখ ছিল মাস্ক ও গামছায় ঢাকা।

হাবিবুল্লাহ যে মামলা করেছেন, তাতে অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। তিনি হামলাকারী কয়েকজনকে চেনার কথা সাংবাদিকদের জানালেও মামলায় আসামির তালিকায় কারও নাম দেওয়া হয়নি।

মিয়ানমারে নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১১ লাখ রোহিঙ্গার অধিকাংশই রয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার শরণার্থী শিবিরে। কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে সম্প্রতি নোয়াখালীর ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়া হয়।

রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে মিয়ানমার চার বছর আগে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে চুক্তি করলেও এখনও প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি।

মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ। ছবি: রয়টার্স

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, মুহিবুল্লাহ মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার পক্ষে ছিলেন বলে ‘স্বার্থান্বেষী মহল’ তাকে হত্যা করেছে।

রোহিঙ্গাদের আরেকটি সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) মুহিবুল্লাহকে হত্যা করেছে সন্দেহ করছে তার পরিবার। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারাও রোহিঙ্গাদের কোনো উপদলকেই সন্দেহ করছেন।

পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমে ‘রোহিঙ্গাদের কণ্ঠস্বর’ হিসেবে পরিচিত মুহিবুল্লাহ ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করে আলোচনায় এসেছিলেন। জেনিভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থায় রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্বও করেছিলেন তিনি।

মুহিবুল্লাহকে হত্যার ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। জাতিসংঘ, ইউএনএইচসিআর, যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।