রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে চুল কেটে দেওয়ায় আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা

সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক ‘১৬ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ায়’ ক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Sept 2021, 11:53 AM
Updated : 29 Sept 2021, 02:58 PM

আন্দোলন থামানোর জন্য মঙ্গলবার দুপুরে তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিক্ষকরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন সম্প্রতি ক্লাস চলাকালে চুল বড় রাখায় ছাত্রদের বকাঝকা করেন। রোববার পরীক্ষার হলের দরজার সামনে তিনি কাঁচি হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কক্ষে প্রবেশের সময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাদের চুল মুঠোর মধ্যে ধরা গেছে, তাদের মাথার সামনের খানিকটা চুল নিজেই কেটে দেন তিনি। এরপর তাদের পরীক্ষা দিতে বাধ্য করা হয়। ছাত্রাবাসে ফিরে গিয়ে এসব শিক্ষার্থীর অনেকেই মাথা ন্যাড়া করে ফেলেন।

পরে বিষয়টি ফেইসবুকে ছড়ালে সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন সেই ১৬ ছাত্রকে ডেকে নিয়ে হুমকি দেন ও ভয়ভীতি দেখান বলে অভিযোগ।

শিক্ষার্থীরা বলেন, এরই মধ্যে নাজমুল হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী সোমবার অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাকে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রথমে তাকে সাহাজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের প্রধান লায়ন ফেরদৌস হিমেল।

এসব ঘটনার পর ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত বিসিকে অবস্থিত মহিলা ডিগ্রি কলেজের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ দেখিয়ে সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের পদত্যাগ ও শাস্তির দাবিতে শ্লোগান দেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে আবার বিক্ষোভ করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।

এ অবস্থায় বেলা ১২টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থিত হন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য আব্দুল লতিফ, রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী ও সঙ্গীত বিভাগের চেয়ারম্যান রওশন আলম।

তারা শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে বৈঠকের প্রস্তাব দিলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আলোচনায় বসতে রাজি হন।

প্রশাসনিক ভবনে হয় এই বৈঠক।

বৈঠক শেষে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য আব্দুল লতিফ বলেন, “আমরা উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনেছি। তদন্তের জন্য বুধবার কমিটি গঠন করা হবে। প্রতিবেদন পেলে পরের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বন্ধ রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।”

অভিযোগ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন বলেন, “শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো ঘটনা ঘটেনি আমি তা বলব না। তবে যা বলা হচ্ছে তা অতিরঞ্জিত।” শিক্ষার্থীদের বকাঝকা করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমার একটু রাগ বেশি, কিন্তু কাউকে বকাঝকা করিনি।”