বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার জানান, আগে যেখানে প্রতিদিন একশ থেকে দেড়শ ট্রাক পণ্য নিয়ে সীমান্তের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে যাওয়ার জন্য বেনাপোলে আসত, এখন সেটা বেড়ে দ্বিগুণ বা আরও বেশি হয়েছে।
“তিন সপ্তাহ ধরে ভারতে পণ্য রপ্তানি বেড়ে গেছে। অথচ ভারত প্রতিদিন ২১৫ ট্রাকের বেশি নিতে পারছে না। সে কারণে বন্দর এলাকায় পণ্যজট বেঁধে যাচ্ছে।”
আর এই জটের কারণে আমদানি পণ্যের ট্রাকও বেনাপোলে প্রবেশ করতে পারছে না। ফলে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে বেনাপোল দিয়ে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪ লাখ মেট্রিক টনের বেশি। তবে মহামারীর মধ্যে রপ্তানির পরিমাণ কমে যায়। দুই দেশেই সংক্রমণ কমে আসায় গত কিছুদিন ধরে রপ্তানি ফের বাড়তে শুরু করেছে।
বেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় গত ২০ দিন ধরে রপ্তানি পণ্যবোঝাই হাজার হাজার ট্রাক অবস্থান করছে বেনাপোল বন্দরসহ আশেপাশের প্রধান সড়কে। সংকীর্ণ সড়কে পাশাপাশি ট্রাক রেখে দেওয়ায় বন্দর এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
এতে এলাকাবাসীর চলাচলে যেমন ভোগান্তি বেড়েছে, তেমনি যাতায়াতে দুর্ভোগে পড়ছেন ভারতগামী যাত্রী এবং ট্রাকশ্রমিকরাও।
সড়কে আটকে থাকা একটি ট্রাকের চালক রহমত আলি বলেন, “ঢাকা থেকে রপ্তানির মাল নিয়ে ১২ তারিখ বেনাপোল আইছি। এখন পর্যন্ত ভারতে ঢুকতি পারি নাই। খুব অসুবিধের মধ্যে আছি। খাওয়া দাওয়া, বাথরুমের কোনো ব্যাবস্থা নেই একেনে।”
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, সয়াবিনের ভূষি, পাট, পাটজাত দ্রব্য, গার্মেন্টস, সাবান, ব্যাটারি, গার্মেন্ট ঝুট নিয়ে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাক প্রতিদিন ভারতে প্রবেশের জন্য বেনাপোলে আসছে এখন।
“কিন্তু ভারত প্রতিদিন গ্রহণ করছে ২০০ ট্রাকের মত। বাকি ট্রাক ও নতুন আসা ট্রাকের কারণে বেনাপোলে জট কমছে না।”
রপ্তানি বাণিজ্য আরও গতিশীল করতে ভারতের পেট্রোপোল বন্দরের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক মামুন কবির বলেন, “তারা প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ২০০ ট্রাকের বেশি রপ্তানি পণ্যের ট্রাক বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করতে পারবে বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছে।”
পণ্যজট কমাতে বেনাপোলেও কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) আব্দুল জলিল বলেন, “ইতোমধ্যে কিছু জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে কিছু অবকাঠামো তৈরি হয়েছে।
“অবকাঠামো আরও বাড়াতে জায়গা অধিগ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে। নির্মাণ কাজ শেষ হলে বন্দরের জায়গা সংকট অনেকটা কেটে যাবে।”