ফেইসবুকের মাধ্যমে তিনি তাদের খুঁজে পান বলে তার স্বজনরা জানান।
কুদ্দুস মুন্সী এখন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বারুইপাড়া গ্রামে বসবাস করছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানার বাড্ডা গ্রামে তার পৈত্রিক বাড়ি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ৭০ বছর আগে চাচার সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে রাজশাহী বেড়াতে এসে হারিয়ে যান তিনি। তখন তার বয়স ছিল ১০ বছর। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে আর পাননি স্বজনরা।
“এরপর আমরা আইয়ুব আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করে আব্দুল কুদ্দুসকে খুঁজে পাই। কুদ্দুস মুন্সীর ভাগ্নেসহ আমরা চারজন গত ২১ সেপ্টেম্বর তার রাজশাহীর বাড়িতে আসি।”
শফিকুল ইসলাম বলেন, কুদ্দুসরা তিন ভাইবোন ছিলেন। এখনও জীবিত আছেন কুদ্দুসের মা মঙ্গলেমা বিবি (১১০) ও এক বোন। ২১ সেপ্টেম্বর মায়ের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেছেন কুদ্দুস।
শনিবার কুদ্দুসের মায়ের কাছে ফেরার কথা।
কুদ্দুসের তিন ছেলে ও পাঁচ মেয়ে রয়েছে। মেয়েদের বিয়ে হয়েছে। দুই ছেলে থাকেন বিদেশে। আর এক ছেলে বাড়িতে আছেন বলে জানান কুদ্দুস।
কুদ্দুস বলেন, “আমি আমার মায়ের সঙ্গে যখন ভিডিও কলে প্রথম কথা বলি তখন আমার মা আমাকে বলে, ‘তুই আমার হারিয়ে যাওয়া আব্দুল কুদ্দুস, বাবা। তোর ছোটবেলায় হাত কেটে গিয়েছিল।’
“মায়ের মুখে এ কথা শোনার পর আমি বলি, ‘মা তোর কুদ্দুসের কোন হাত কেটে গিয়েছিল?’ তখন মা বলে, ‘বাম হাতের বুড়ো আঙ্গুল কেটে গিয়েছিল। তখন আমি বুঝতে পারি যে তিনিই আমার মা।”
শফিকুল বলেন, শুক্রবার রাতে তারা আত্রাই স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠবেন। সকালে ঢাকার বিমানবন্দর স্টেশনে নামবেন। সেখান থেকে আবার ট্রেনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদেশে রওনা হবেন।
এদিকে ‘৭০ বছর পর’ মাকে খুঁজে পাওয়ার ঘটনা আলোচনার জন্ম দিয়েছে বাগমারার বারুইপাড়া গ্রামে। চায়ের দোকান থেকে পাড়ায় পাড়ায়, মোড়ে মোড়ে মানুষের মুখে মুখে ফিরছে আব্দুল কুদ্দুসের গল্প।
আইয়ুব আলী বলেন, বারুইপাড়া বাজারের মোড়ে এক চায়ের দোকানে বসে ৭০ বছর আগে হারিয়ে যাওয়ার গল্প বলছিলেন আব্দুল কুদ্দুস মুন্সি।
“তার গল্পটি ফোনে রেকর্ড করে গত ১২ এপ্রিল আমার ফেইসবুক পেইজে আপলোড করি। পোস্টে লিখেছিলাম, ব্রহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার এই বৃদ্ধ আজ থেকে প্রায় ৭০ বছর আগে হারিয়ে মা-বাবা থেকে বিচ্ছিন্ন।”