চোখ জুড়ানো শরৎ এল কুড়িগ্রামের চরে

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে কাশফুল জানিয়ে দিয়েছে শরতের আগমনবার্তা। কাশফুলের সঙ্গে বড় বড় ঝাউগাছ বাড়িয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

আহসান হাবীব নীলু কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Sept 2021, 11:23 AM
Updated : 24 Sept 2021, 11:23 AM

প্রতিদিন বিভিন্ন চরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে যাচ্ছেন অনেকে।

জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি সামিউল হক নান্টু বলেন, “কাশফুল বাতাসে দোল খাওয়ার দৃশ্য মন কাড়ে সবার। প্রতিবছর শরতের এই সময়টাতে চরাঞ্চলে শহরের মানুষের পদচারণ বাড়ে। ঝাউগাছে লাল, গোলাপি, হলুদসহ বিভিন্ন রংয়ের ফুল বাড়তি আকর্ষণ জোগায়।”
সরেজমিনে দেখা গেছে, শরতের শেষ বিকেলে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। কালো মেঘের আবরণ ভেদ করে উঁকি দিচ্ছে মিষ্টি রোদ। সাদা মেঘের মিটিমিটি হাসি যেন শুভ্রতা ছড়াচ্ছে চারদিকে। ফুটেছে রঙিন শিউলি। সাদা কাশফুল শারদ বন্দনার কলরবে মেতেছে যেন।

চরে কাশফুল দেখতে আসা কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অনার্সের শিক্ষার্থী আহসান রাফি বলেন, “মন খারাপ থাকলে এখানে আসি। কিছুক্ষণ সময় কাটাই। মন ভালো হয়ে যায়। তবে নৌকায় আসতে হয়। এ জন্য সময় ও অর্থ দুটোই ব্যয় হয়।”

নিজেকে হেনা নামে পরিচয় দিয়ে এক তরুণী বলেন, “শরৎ শোভায় প্রকৃতিতে সাজ-সাজ রব এ যেন। নীল আকাশে চলছে সাদা-কালো মেঘের লুকোচুরি। কখনও কালো মেঘে আবার কখনও সাদা মেঘের আভরণে লুকিয়ে হাসছে সোনালি সূর্য। পড়ন্ত বিকেলে মুহূর্তের দৃশ্য অন্য রকম। শহরে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে না। গ্রামবাংলার অনেক ফুল হারিয়ে গেছে। তবে এখন নদী-তীরবর্তি চরে কাশবন দেখে আসলেই মনটা ভাল হয়ে যায়।”

কাশ ও ঝাউ উভয়েরই রয়েছে আর্থমূল্য।

উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মোল্লারহাট চরের বাসিন্দা পাখি আক্তার বলেন, “কাশ দিয়ে আমরা ঘরের বেড়া, ছাউনি, ঝাড়ু বানাই। আর ওলা গাছ কেটে রান্নার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করি। এগুলো বিক্রি করে নগদ আয়ও হয়।”

একই এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, পানের বরজের জন্য কাশ কাজে লাগে। রাজশাহী, খুলনা, বরিশালসহ দেশের অনেক স্থানে পাঠানো হয় নৌকায় ও সড়ক পথে। তাছাড়া কাশবন বন্যার সময় পানির তোড় কমায়।

চরের পরিত্যক্ত বালুজমিতে এমনিতেই জন্মায় কাশ। এর জন্য কোনো খরচ হয় না।

গড়ে প্রতি বিঘা জমির কাশ কেটে আঁটি বেঁধে ১০-১২ হাজার টাকায় বেচা যায় বলে এলাকাবাসী জানান।