যশোরে ‘চাঁদাবাজকে’ পিটুনি, আটকের পর মৃত্যু

যশোরে ‘পুলিশ পরিচয়ে’ চাঁদাবাজির অভিযোগে পিটুনির শিকার এক ব্যক্তি আটক অবস্থায় মারা গেছে।

যশোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2021, 07:19 PM
Updated : 23 Sept 2021, 07:19 PM

বৃহস্পতিবার বিকালে সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি বাজারের চৌগাছা বাসস্ট্যান্ডে পিটুনির ঘটনা ঘটে। পরে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দিয়ে থানায় নেওয়া হয়। সেখানে অসুস্থ হলে ফের হাসপাতালে নেওয়া হয়; সেখানে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত রবিউল ইসলাম যশোর শহরের পালবাড়ি পাওয়ার হাউস এলাকার প্রয়াত মোজাম্মেল হকের ছেলে।

যশোর কোতায়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, বিকালে রবিউল যশোর সদরের চুড়ামনকাটি বাজারের চৌগাছা বাসস্ট্যান্ডে পুলিশ পরিচয়ে একটি ইজিবাইক থেকে চাঁদাবাজি করছিলেন।

“এ সময় ইজিবাইকে থাকা চার ব্যক্তির চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে রবিউলকে ধরে পিটুনি দেয়। খবর পেয়ে স্থানীয় সাজিয়ালি ফাঁড়ির পুলিশ তাকে উদ্ধার করে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।”

ওসি বলেন, প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে কোতোয়ালি থানায় নেওয়া হয়। থানায় অবস্থানকালে সন্ধ্যা ৬টার দিকে রবিউল অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে আবারও যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সালাহউদ্দিন স্বপন বলেন, বিকাল ৪টা ৩৮ মিনিটের দিকে পুলিশ রবিউলকে ‘পাবলিক অ্যাসল্ট’ হিসেবে প্রথম জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। এসময় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে আবার ৬টা ২০ মিনিটের দিকে পুলিশ তাকে নিয়ে আসে। এসময় সে মৃত অবস্থায় ছিল।

“তার শরীরে চাপা আঘাত রয়েছে। সে হার্টফেল করে মারা যেতে পারে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে হত্যার কারণ জানা যাবে।”

যশোর সদরের সাজিয়ালি ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সুকুমার কুণ্ডু বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখান থেকে রবিউলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। 

তিনি আরও বলেন, চুয়াডাঙ্গার দর্শনা উপজেলার দক্ষিণ চাঁদপুর গ্রামের আব্দুল মালেক মোল্লা নামে এক ব্যক্তি যশোর থেকে নতুন একটি ইজিবাইক কিনে বাড়ি যাওয়ার সময় তাদের থামিয়ে চাঁদা দাবি করছিলেন রবিউল।

আব্দুল মালেক মোল্লা বিকালে এ ঘটনায় যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি চাঁদাবাজির অভিযোগ করেছেন বলে জানান ওসি তাজুল ইসলাম।

অভিযোগে মালেক উল্লেখ করেন, তিনি যশোর উপশহর এলাকা থেকে নতুন একটি ইজিবাইক কিনে বাড়ি ফিরছিলেন। সাথে তার বাবা আসালত মোল্লাসহ আরও দুইজন ছিলেন। পথে চুড়ামনকাটিতে রবিউল তাদের থামিয়ে নিজেকে সাজিয়ালি ফাঁড়ির পুলিশ পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবি করেন। এ সময় তিনি রবিউলকে ৫শ টাকা দেন। কিন্তু রবিউল ওই টাকা ছুড়ে ফেলে দেন। তখন তারা চিৎকার করলে আশপাশের মানুষজন এসে রবিউলকে আটক করে পিটুনি দেয়।

ওসি আরও জানান, রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় হত্যা ও পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে।