ইলিশে সরগরম চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাট

চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাটে ইলিশের আমদানি বাড়ায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে ব্যবসায়ী, জেলে ও শ্রমিকদের মাঝে।

চাঁদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Sept 2021, 10:51 AM
Updated : 22 Sept 2021, 10:51 AM

তবে আমাদানি বাড়লেও দাম কমেনি বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।

বুধবার দুপুরে চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাটে প্রচুর ইলিশেরে আমদানি দেখা গেছে। ক্রেতা-বিক্রেতার হাকডাকে মুখরিত চাঁদপুর মাছঘাট। ট্রলার থেকে মণে মণে ইলিশ এনে ঘাটে বড় বড় স্তূপ করা হচ্ছে মাছঘাটে।

গত কয়েকদিন ধরে আড়াই থেকে তিন হাজার মণ ইলিশ আমদানি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

চাঁদপুর মাছঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী মিজানুর রহমানজানান, বড়স্টেশন মাছঘাটে সড়ক ও নৌপথে ইলিশ নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে ঘাটে প্রচুর ইলিশের আমাদনি শুরু হয়েছে। যে পরিমাণ মানুষ ঘাটে আসে, জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না। বড় বিষয় হচ্ছে ইলিশের আমদানি বাড়লেও দাম কমেনি। মূলত ভারতে ইলিশ পাঠানো হবে, সেই কারণে দাম বেড়ে গেছে।

তিনি বলেন, “এক কেজির ইলিশের দাম ১৩০০ টাকা, দেড় কেজি ইলিশের দাম ১৫০০ টাকা আর দুই কেজির ইলিশের দাম ১৮০০ টাকা কেজি। এছাড়া ৯০০ থেকে এক হাজার গ্রামের ইলিশের মণ এখন ৪৮-৫০ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে।”

মাছঘাটে ইলিশ কিনতে আসা মো. কামাল হোসেন বলেন, “কয়েকদিন ধরে শুধু দেখছি ইলিশ আর ইলিশ। সেই জন্য ইলিশ কিনতে ঘাটে আসলাম। এসে অবাক হলাম।”

আবদুল আজিজ  নামের আরেক ক্রেতা বলেন, “প্রচুর ইলিশ থাকা সত্ত্বেও দাম কমেনি। তাহলে আমাদানি বেড়ে আমাদের লাভ কি। ব্যবসায়ীদের জন্য আমরা মাছ কিনে নিতে পারছি না।”

হাজীগঞ্জ উপজেলা থেকে বড়স্টেশন মাছঘাটে আসা অনলাইনে ইলিশ ব্যবসায়ী মো. ফারুক হোসেন বলেন, “ক্রেতাদের কাছে ইলিশের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। দাম বেশি থাকায় আমাদেরকেও অনলাইনে বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।

“ঘাটে পর্যাপ্ত ইলিশ আছে, তবে দাম নাগালের বাইরে। সরকারের প্রতি অনুরোধ, যাতে ইলিশের দামের বিষয়ে একটু নজরদারি করে।“

চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শবে বরাত সরকার বলেন, “ভরা পূর্ণিমা ঘিরে মাছঘাটে ইলিশের আমদানি বেড়েছে। আমাদানি থাকলেও দাম কমেনি। দুর্গাপূজা সামনে রেখে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করার অনুমতি দিয়েছে সরকার।

“ভারতে বিক্রির লক্ষ্যে ব্যবসায়ীরা দাম ছাড়ছে না। আশা করি, সেখানে মাছ পাঠানো হয়ে গেলে দাম কমে যাবে।”

চাঁদপুর জেলা মৎস্য র্কমকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, অক্টোবরের যে কোনো সময় মা ইলিশ রক্ষা অভিযান শুরু হবে। যার কারণে জেলেরা পুরোদমে ইলিশ শিকারে ব্যস্ত রয়েছে। গত বছর ২২ অক্টোবর থেকে ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। এবার এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি কবে থেকে অভিযান শুরু হবে।

তবে ২০ তারিখ পূর্ণিমা, যার কারণে ২০ তারিখের আগেও মা ইলিশ রক্ষা অভিযান শুরু হতে পারে বলে জানান তিনি।

চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান জানান, অমাবশ্যা ও পূর্ণিমা ঘিরে ইলিশ লোনাপানি থেকে মিঠা পানিতে বিচরণ করে। এই সময়টাতে ইলিশ খাদ্য সংগ্রহ এবং ডিম ছাড়ার লক্ষ্যে নদী অঞ্চলে যাতায়াত শুরু করে। যার কারণে এখন ইলিশের আমদানি বেড়েছে।