ভারতে ‘পাচার’ ৩৭ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছে তিন বছরে

‘ভালো কাজের প্রলোভনে ফাঁদে পড়ে’ ভারতে `পাচার’ হওয়া ৩৭ বাংলাদেশি তিন বছর পর দেশে ফিরেছেন।

বেনাপোল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Sept 2021, 04:34 PM
Updated : 21 Sept 2021, 05:31 AM

সোমবার বিকালে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে তাদের এপারে পাঠানো হয় বলে ইমিগ্রেশন ওসি আহসান হাবিব জানান।

আহসান হাবিব বলেন, ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ 'ট্রাভেল পারমিট'-এর মাধ্যমে তাদের হস্তান্তর করে। বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের গ্রহণ করেছে।

ফেরত আসাদের মধ্যে শিশু ও তরুণ ২০ জন। তাদের বাড়ি কুমিল্লা, কুড়িগ্রাম, বরিশাল, ফরিদপুর, নড়াইল, পিরোজপুর, রাজশাহী, সুনামগঞ্জ, রাজবাড়ি, ঠাকুরগাঁও, সাতক্ষীরা, গোপালগঞ্জ, যশোর ও খুলনা জেলায় বিভিন্ন এলাকায়। এদের বয়স ১২ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে।

বেসরকারি সংস্থা ‘জাস্টিস এন্ড কেয়ার’-এর সিনিয়ার প্রোগ্রামার এবিএম মুহিত হোসেন বলেন, ভালো কাজের প্রলোভনে দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে এসব শিশু-কিশোর-কিশোরী প্রায় তিন বছর আগে ভারতে যায়।

“সেখানে পাচারকারীরা তাদের ভালো কাজ না দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করে। খবর পেয়ে ভারতীয় পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করে। পরে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ দিয়ে পুলিশ তাদের আদালতে সোপর্দ করে।”

মুহিত বলেন, "ভারতীয় একটি মানবাধিকার সংস্থা তাদের ছাড়িয়ে নিজেদের হেফাজতে নেয়। পরে রাষ্ট্রীয় প্রক্রিয়ায় ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়।"

ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি আহসান হাবিব বলেন, ইমিগ্রেশনে কাগজপত্রের আনুষ্ঠানিকতা শেষে আইনি সহায়তা দিতে তাদের মানবাধিকার সংস্থা 'জাস্টিস এন্ড কেয়ার'-এর কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এবিএম মুহিত হোসেন বলেন, কোভিড পরিস্থিতির কারণে ফেরত আসাদের ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে। পরে তাদের আইনি সহায়তাসহ পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, পশ্চিমবঙ্গে প্রায় দেড়শতাধিক বাংলাদেশি নারী ও শিশু বিভিন্ন সময়ে পাচার হয়ে কিংবা অবৈধভাবে বা ভুলক্রমে ভারতে এসে আটক হয়ে বিভিন্ন সেইফ হোমে অবস্থান করছেন।

তাদের বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ডিরেক্টরেট অব চাইল্ড রাইটস এন্ড ট্রাফিকিং কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনকে অবহিত করে। উপ-হাইকমিশন এসব সেইফ হোম পরিদর্শন করে আটক বাংলাদেশি নারী ও শিশুদের তথ্য সংগ্রহ করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে।

পরবর্তীতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব যাচাই প্রক্রিয়া সম্পাদনের পর কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন ট্রাভেল পারমিটের প্রমাণীকরণ, ডকুমেন্টেশন ইস্যু করে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

পশ্চিমবঙ্গ এবং ভারতের বিভিন্ন সংস্থা, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিজিবি এবং বিএসএফসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার সময় বেনাপোল সীমান্তে উপস্থিত ছিলেন।