শার্শায় মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত শিল্পীরা

বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজাকে  সামনে রেখে যশোরের শার্শায় মণ্ডপে মণ্ডপে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা।

বেনাপোল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Sept 2021, 05:31 AM
Updated : 19 Sept 2021, 05:31 AM

আগামী ১১অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে দূর্গাপূজার মহাউৎসব।

ইতোমধ্যেই অধিকাংশ প্রতিমার বাঁশ-কাঠের উপর মাটির প্রলেপ দিয়ে মূল কাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে।এখন রং তুলির আঁচড়ে প্রতিমাকে দৃষ্টিনন্দন করার কাজে মহাব্যস্ত প্রতিমা শিল্পীরা। 

বেনাপোলের ছোটআচড়া মণ্ডপে কাজ করছেন সাতক্ষীরার বাসুদেব ভাস্কর।

বিডিনিউজ টোয়েন্টফোর ডটকমকে বাসুদেব বলেন, এ বছর তিনি বিভিন্ন এলাকায় ১৫টি মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ নিয়েছেন। এর মধ্যে শার্শা উপজেলার পুটখালি, শার্শা জেলেপাড়া, ছোটআচড়া ও যাদবপুর মণ্ডপে কাজ করছেন। প্রতিটায় পারিশ্রমিক নিচ্ছেন ৩০ হাজার টাকা করে।

তার পাঁচজন সহকারী আছে জানিয়ে বলেন, “করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে উপযুক্ত সহকারী ও কারিগরের অভাবে মন ভোলানো প্রতিমা তৈরি সম্ভব হচ্ছে না।”

এ মৌসুমে প্রতিমা তৈরি করে দুই লাখ টাকা আয় হবে বলে আশা বাসুদেবের।

প্রতিমা শিল্পী সাতক্ষীরার আশাশুনির সুকান্ত মণ্ডল (৬০) কাজ করছেন বেনাপোলের পাঠবাড়ি আশ্রমের মন্দিরে।তিনি প্রায় ৩৫ বছর ধরে প্রতিমা তৈরি করছেন। তার বাবা-দাদাও প্রতিমা তৈরি করতেন।

সারা বছেই প্রতিমা তৈরি করে জীবিকা চালান বলে জানিয়ে সুকান্ত বলেন, “দুর্গাপূজা এলে আমাদের কাজ বেড়ে যায়। এ সময় কর্মচারীদের বেতন দিয়েও আমাদের লাখ খানেক টাকা আয় থাকে।”

তবে এ পেশায় দিন দিন আগ্রহ কমে যাচ্ছে বলে অনেক শিল্পী জানিয়েছেন।

প্রতিমা শিল্পী বিশ্বজিৎ পাল বলেন, “এ পেশায় এই একটি মৌসুম ছাড়া সারা বছর কোনো কাজ থাকে না। তখন কি করে দিন চলবে? সেই অনিশ্চয়তার কারণেই লোক কমে যাচ্ছে এ পেশায়।”

শার্শার সামটা গ্রামের সার্বজনীন পূজামণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন বিশ্বজিৎ (৪৫)।

এই পূজা মণ্ডপের সাধারণ সম্পাদক অরুণ চন্দ্র পাল বলেন, “এখানে আমরা ২৬টি পরিবার বসবাস করি। প্রতিবছর জাঁকজমকভাবে পূজা উদযাপন করলেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে ছোট পরিসরে আয়োজন করেছি।”

শার্শা উপজেলায় এ বছর মোট ২৮টি মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে বলে উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বৈদ্যনাথ দাস জানান।

তিনি বলেন, পূজার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি পরিষদের পক্ষ থেকে প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক থাকছে। সব রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের কর্মীদের সমন্বয়ে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী করা হচ্ছে।

শার্শা থানার ওসি বদরুল আলম খান জানান, মণ্ডপগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত ছাড়াও শহরে পুলিশি টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া র‌্যাব ও বিজিবি থাকছে।