তাড়াশে ঘুষ দাবির অভিযোগে কর্মকর্তাকে পিটুনি

সিরাজগঞ্জের তারাশে ব্যবসায়ীদের কাছে ঘুষ দাবির অভিযোগে উপজেলার এক কর্মকর্তাকে মরধর করেছে জনতা।

ইসরাইল হোসেন বাবু সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Sept 2021, 04:02 PM
Updated : 15 Sept 2021, 04:02 PM

উপজেলার ধামাইচ হাটে মঙ্গলবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে বলে তাড়াশ থানার ওসি মো. ফজলে আশিক জানান।

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ পিটুনির শিকার স্যানিটারি ইন্সেপেক্টর এস এম শহিদুল ইসলাম রন্টুকে এই ঘটনার কারণ ব্যাখ্যা করতে বলেছে।

ধামাইচ হাটের মসলা ও তেল বিক্রেতা ইমদাদুল হক বলেন, “পণ্যে ভেজাল রয়েছে অভিযোগ তুলে স্যানিটারি ইন্সেপেক্টর আমার কাছে ঘুষ দাবি করেন। এ সময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা তাকে মারধর করে জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেলেছে।”

হাটের হোটেল ব্যবসায়ী রাশিদুল ইসলাম বলেন, “স্যানিটারি ইন্সেপেক্টর এস এম শহিদুল ইসলাম রন্টু প্রায়ই হাট-বাজারে এসে ব্যবসায়ীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা ঘুষ নিয়ে থাকেন। মঙ্গলবার বিকালেও হাটে এসে অনেক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। আমার দোকানে এসেও তিনি টাকা দাবি করেছিলেন।”

ওসি ফজলে আশিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সংবাদ পেয়ে এস এম শহিদুল ইসলাম রন্টু ও নৈশ প্রহরী গোরা চাঁদকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। রাতে মুচলেকা দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এ দুজনকে নিজ জিম্মায় নিয়ে যান। এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি।

স্যানিটারি ইন্সেপেক্টর এস এম শহিদুল ইসলাম রন্টু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হাটের একটি দোকানে গিয়ে নিম্ম মানের হলুদ গুড়ার নমুনা সংগ্রহ করার পরই ঝামেলা বেধে যায়। এক পর্যায়ে সেখানে প্রচুর লোকজন জমায়েত হয়। এদের মধ্যে কয়েকজন আমাকে নিয়ে টানা-হেচঁড়া করেন। এতে পরনের জামা ছিঁড়ে গেলেও কেউ আমাকে মারপিট করেনি।”

তাৎক্ষণিক ধারণ করা একটি ভিডিও তার সংগ্রহে রয়েছে দাবি করে স্যানিটারি ইন্সেপেক্টর বলেন, “অভিযুক্তদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জামাল মিয়া শোভন বলেন, উত্তম মাধ্যম দিয়ে স্থানীয়রা স্যানিটারি ইন্সেপেক্টর ও পিয়নকে পুলিশে সোপর্দ করেছিল। অভিযানের বিষয়ে আগে আমাকে কোনো প্রকার অবগত করা হয়নি। প্রাথমিকভাবে জেনেছি তারা হাটে গিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে টাকা দাবি করেছিল।”

বিষয়টি তদন্ত করার জন্য একটি টিম গঠন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, টিমকে সরজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্তপূর্বক আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্তে ঘুষ দাবির অভিযোগ প্রমাণিত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

“আর যদি অভিযোগ প্রমাণিত না হয়, তাহলে মারপিটের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

এ ঘটনায় ইতোমধ্যে স্যানিটারি ইন্সেপেক্টরকে শোকজ বা কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।