চলন্ত লঞ্চ থেকে ‘৪ শিশুকে নদীতে নিক্ষেপ’: মুন্সীগঞ্জে মামলা

ঢাকার সদরঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া চাঁদপুরগামী একটি লঞ্চ থেকে মেঘনা নদীতে চার শিশুকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে হত্যাচেষ্টার মামলা হয়েছে মুন্সীগঞ্জে।

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Sept 2021, 05:07 AM
Updated : 13 Sept 2021, 05:07 AM

মুন্সীগঞ্জ থানার পরিদর্শক রাজীব খান জানান, ইমাম হাসান-৫ নামে লঞ্চের অজ্ঞাতনামা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে রোববার রাত ৯টায় তাদের থানায় এই মামলা করেন মুক্তারপুর নৌপুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. লুৎফর রহমান।

ভাড়ার টাকা না থাকায় শনিবার সকাল ১০টার দিকে মেঘনা নদীতে লঞ্চ থেকে তাদের ফেলে দেওয়া হয় বলে শিশুদের অভিযোগ।

পরে গজারিয়া থানার ওসি মো. রইছ উদ্দিন তাদের উদ্ধার করেন।

শিশুদের তিন জনরে বয়স ১৩ বছর। আরেকজনের বয়স ১০ বছর। তাদের বাড়ি নোয়াখালী, গাইবান্ধা ও কুমিল্লায়। তারা ঢাকার সদরঘাট এলাকায় থেকে লঞ্চে পান বিক্রি ও বোতল সংগ্রহের কাজ করে বলে তাদের বরাতে পুলিশ জানিয়েছে।

ওসি রইছ উদ্দিন বলেন, “মুন্সীগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনাল থেকে আনুমানিক দুই কিলোমিটার দূরে একটি স্পিডবোটে মেঘনা নদীতে অবস্থানকালে আমি দুই শিশুকে ভাসতে দেখি। তাদের উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে নিয়ে গেলে আরও দুই শিশুকে পাওয়া যায়। চার শিশু একসঙ্গে লঞ্চে পানি বেচতে উঠেছিল বলে তারা জানিয়েছে। কিন্তু ভাড়ার টাকা না থাকায় তাদের লঞ্চ থেকে ফেলে দেওয়া হয় বলে তাদের অভিযোগ।”

তবে ইমাম হাসান-৫ লঞ্চের মাস্টার মো. দেলোয়ার হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

তিনি  বলেন, “শিশুদের ফেলে দেওয়া হয়নি। এসব শিশু পানি বিক্রেতার কাছ থেকে ভাড়াও নেওয়া হয় না।”

তার দাবি, “শিশুরা স্বেচ্ছায় নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিল। পরে যাত্রীরা আমাদের অবগত করে। কতজন ঝাঁপ দিয়েছে তা জানি না। বড় লঞ্চগুলো যখন ঘাটের সামনে দিয়ে যায় তখন স্থানীয় ট্রলারগুলো লঞ্চের গায়ে ভেড়ে। এ সময় যাত্রীরা ওঠানামা করে। মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় দুই শিশু ট্রলার দেখতে না পেয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর লাফ দেয়। তারা ভেবেছিল ট্রলার এসে তাদের নিয়ে যাবে। লঞ্চঘাট থেকে প্রায় ১৫০ ফুট দূর দিয়ে যাচ্ছিল লঞ্চটি। শিশুরা সাঁতরে যাওয়ার জন্য প্রস্তত ছিল। তাছাড়া শিশুরা লাফ দেওয়ার অনেক সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর যাত্রীরা অবগত করেছে আমাদের।”

মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, “মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাট অতিক্রম করার সময় পর্যন্ত কেউই যাত্রীদের কাছে ভাড়া সংগ্রহ করতে যায়নি।”

মামলার তদন্তে সব বেরিয়ে আসবে বলে জানিয়েছেন পরিদর্শক রাজীব খান।

এর আগে দুই শিশুকে মেঘনায় ফেলে দেওয়ার খবর গণমাধ্যমে আসলেও ওই দুই শিশুর আরও দুই সঙ্গী আগেই অন্য ট্রলারের সহযোগিতায় ঘাটে পৌঁছেছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।