বরগুনায় ক্লাস শুরুর আগেই ভাঙা হচ্ছে `অর্ধশত’ স্কুলভবন

সরকারি নির্দেশনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কয়েকদিন মাত্র বাকি থাকলেও বরগুনার প্রায় অর্ধশত পুরনো প্রাথমিক স্কুলভবন ভাঙার জন্য নিলামে দেওয়া হয়েছে। এতে জেলার কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর পাঠ কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার হুমকিতে পড়েছে।

বরগুনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Sept 2021, 01:09 PM
Updated : 8 Sept 2021, 01:11 PM

সরকার আগামী ১২ সেপ্টেম্বর সারা দেশের স্কুল-কলেজ খোলার ঘোষণা দিয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) এমএম মিজানুর রহমান জানান, জেলায় প্রায় অর্ধশত প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙার জন্য নিলাম করা হয়েছে।

এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরু বিষয়ে তিনি বলেন, তিনি সকল স্কুল পরিদর্শন করছেন। উপজেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, প্রধান শিক্ষক এবং বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে নিয়মিত সভা করা হচ্ছে।

তবে কীভাবে এই সময়ের মধ্যে পাঠদান শুরু করা হবে সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।

করোনাভাইরাস মহামারীর দেড় বছরের বেশি সময় সুযোগ থাকা সত্ত্বেও এসব ভবন সংস্কারের কাজ ঝুলে থাকায় এ সংকটের সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা।

বরগুনা শহরের চরকলোনি এলাকার সরকারি হামিদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, নিলামে বিক্রি হওয়া দুটি স্কুল ভবন ভাঙার কাজ চলছে। পাঠদানের বিকল্প কোনো ভবনও নেই এখানে। ছোট একটি টিনের ঘর থাকলেও সেখানে পাঠদানের কোনো ব্যবস্থা নেই।

স্কুলটির শুধু পঞ্চম শ্রেণিতেই ৭৮ জন এবং সব মিলিয়ে ৩৪৫ শিক্ষার্থী রয়েছে বলে জানান স্কুল কর্তৃপক্ষ।

চরকলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যবস্থা কমিটির সভাপতি সেলিনা আক্তার জানান, নতুন ভবন নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে প্রায় এক বছর আগে। অথচ পুরনো ভবন নিলামে দেওয়া হয়েছে মাত্র সাত-আট দিন আগে।

“এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে বহুবার যোগাযোগ করা হলেও যথাসময়ে তা করা হয়নি। এ কারণে এখন চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এ বিদ্যালয়ের তিন শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থী।”

এছাড়া বরগুনা সদর উপজেলার দক্ষিণ বাঁশবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধুপতি মনসাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাইঠা লবণগোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ ইটবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, নিলাম ক্রেতাদের কেউ পুরনো ভবন ভেঙে নিয়ে গেছে। কেউ-বা এখনও তা ভাঙার কাজে ব্যস্ত।

এসব বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তা, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি এবং শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন করে ভবন নির্মাণে কত সময় লাগবে এবং সেই পর্যন্ত কীভাবে পাঠদান করা হবে এ বিষয়ে এখনও সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা পাননি তারা।

বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামিয়া শারমিন বলেন, ভবনশূন্য বিদ্যালয়গুলোতে শিগগিরই অস্থায়ী ঘর তুলে দেওয়া হবে। সেগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করার ব্যবস্থা করা হবে।

বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানান,  এসব সমস্যা নিয়ে ইতোমধ্যে একাধিকবার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সভা করা হয়েছে।

বিকল্প শেল্টার নির্মাণ করে এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান করা যায় সে লক্ষ্যে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।