মঙ্গলবার পদ্মা সেতুর দুপাশে রেল লিংক পরিদর্শন করে রেলমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুর রেলের অংশে ট্র্যাক বসাতে আগামী জানুয়ারির মধ্যে হস্তান্তর করা না হলে সড়কপথের সঙ্গে একই দিনে ট্রেন চালু করা সম্ভব হবে না।
“মূল সেতুতে ব্যালাস্টলেস ট্র্যাক বসাতে সময় লাগবে ছয় মাস। সেতু কর্তৃপক্ষ আগামী জানুয়ারির মধ্যে হস্তান্তর করলে পদ্মা সেতুতে একই দিনে সড়কের সঙ্গে ভাঙ্গা-মাওয়া পর্যন্ত রেলও চলবে। তবে ঢাকা-ভাঙ্গা রেললাইন চালু হবে ২০২২ সালের ১৬ ডিসেম্বর।”
সুজন বলেন, পদ্মা সেতুতে সড়ক নির্মাণ, বিদ্যুৎ-গ্যাস সংযোগ এবং ওয়াকওয়ে নির্মাণের জন্য মার্চের আগে রেলপথের কাজ শুরুর অনুমতি দিতে চাচ্ছে না সেতু কর্তৃপক্ষ। আর রেলপথের কাজ শেষ করতে সময় লাগবে ছয় মাস। ফলে জুনের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না।
“তাই সেতুর সড়ক ও রেলপথ একসাথে উদ্বোধন নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।”
মন্ত্রী আরও বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি সেতু কর্তৃপক্ষকে রাজি করাতে যেন দুটি কাজ একসাথেই শেষ করা যায়।”
সড়ক পথ চালু হয়ে গেলে রেলপথ নির্মাণ করা আরও কষ্টকর হবে বলে জানিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, “একসাথে কাজ শেষ করতে না পারলে, রেল লাইনের কাজ করতে সমস্যা হবে। কেননা সেতুতে যান চলাচল শুরু করলে যে ভাইব্রেশন বা কম্পন হবে তাতে রেলপথের ঢালাইয়ের জটিলতা হবে।”
সেই ক্ষেত্রে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিনক্ষণ পেছাবে কিনা প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, “রেলপথের জন্য মূল সেতুর উদ্বোধন পেছাক সেটা চাই না। তবে একসাথে কাজ শেষ করতে না পারলে, রেলপথ নির্মাণে সমস্যা হবে।”
পদ্মাসেতুর দুই প্রান্তে রেল অবকাঠামোর কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। মাওয়া প্রান্তে রেল সংযোগ সেতুতে চলছে রেল। রেলমন্ত্রী নিজেই পরীক্ষামূলকভাবে চলা রেলে চড়ে সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন।
পদ্মা সেতু রেললিংক প্রকল্প কর্তৃপক্ষ জানায়, ঢাকা থেকে যশোর ১৭২ কিলোমিটার রেললিংক প্রকল্পের এ পর্যন্ত রেল পথের ৪৩.৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ৩০ জুন ২০২৪ সালের মধ্যে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত রেল পথ চালু হবে। আর আগামী বছর ডিসেম্বরের মধ্যে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত রেলপথ চালু হবে বলেও জানানো হয়।
৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের কাজ চলছে। এই পথে ২০টি স্টেশন থাকবে, যার মধ্যে ছয়টি বিদ্যমান এবং ১৪টি করা হবে নতুন।
পদ্মা সেতু রেললিংক প্রকল্প ব্যবস্থাপক ব্রিগেডিয়ার আহমেদ জামিউল ইসলাম বলেন, পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে রেল সংযোগ সেতুর পুনঃনির্মাণ করা ১৪ ও ১৫ নম্বর পিয়ার সম্পন্ন হবে আগামী ডিসেম্বরে। ঢাকা থেকে ভাঙ্গা রেল জংশনের দূরত্ব ৭৭ কিলোমিটার।
মতবিনিময়কালে রেলমন্ত্রী ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রেলসচিব সেলিম রেজা, রেলওয়ে মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদার, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প পরিচালক মো. আফজাল হোসেন, মুন্সীগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শ্রীনগর সার্কেল) মো. আসাদুজ্জামান, লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল আউয়াল, পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আবদুল কাদের প্রমুখ।