মৌলভীবাজারে ক্ষেতের পোকা দমনে আলোক ফাঁদ

ক্ষেতের পোকা দমনে মৌলভীবাজারে দুই শতাধিক আলোক ফাঁদ পাতা হয়েছে।

বিকুল চক্রবর্তী মৌলভীবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Sept 2021, 01:23 PM
Updated : 2 Sept 2021, 01:23 PM

জেলার কৃষি বিভাগ বুধবার রাতে একযোগে এই কার্যক্রম শুরু করেছে।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ফসলের জমিতে সন্ধ্যার সময় ফাঁদ হিসেবে অন্ধকারে বাতি জ্বালানো হয়। বাতি জ্বালালে পোকামাকড় সেদিকে আকৃষ্ট হয়। এরপর সেসব পোকা গিয়ে পড়ে বাতির নিচে রাখা গামলার ভেতরে। গামলায় পানির সাথে থাকে ডিটারজেন্ট বা সাবানের ফেনা। ওই ফেনায় গিয়ে বসলে বা পড়লে পোকামাকড় উঠতে পারে না। সেখান থেকেই ধানের জন্য ক্ষতিকর পোকা শনাক্ত করা হয়।

“ফসল ক্ষেতে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন কৌশলের মধ্যে একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি হলো আলোক ফাঁদ। ধান ক্ষেতে পোকার উপস্থিতি নিশ্চিত হতে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।”

তিনি বলেন, ধানক্ষেতে বিভিন্ন ধরনের পোকা থাকে; কিন্তু পোকাগুলি উপকারী নাকি ক্ষতিকর সেটা জানার জন্য ব্যবহার করা হয় আলোক ফাঁদ। একইভাবে, ক্ষতিকর পোকার উপস্থিতি থাকলেই যে রাসায়নিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে না।

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ফাঁদে আটকাপড়া পোকা শনাক্ত করা যায় সহজে। পরে পোকার উপস্থিতির ওপর ভিত্তি করে ধান রক্ষায় কোন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে কৃষককে পরামর্শ দেওয়া সম্ভব হয়।

“আলোর ফাঁদ স্থাপনের মাধ্যমে মূলত পোকামাকড়ের উপস্থিতি জরিপ করা হয়। এ লক্ষ্যে মৌলভীবাজার জেলা ও উপজেলায় আলোক ফাঁদ উৎসবের মাধ্যমে কৃষি বিভাগের সহায়তায় স্থাপন করা হয়েছে অনেকগুলো আলোর ফাঁদ।”

বুধবার রাতে জেলার সাত উপজেলায় ২০৫টা  আলোর ফাঁদ বসানো হয় বলে তিনি জানান।

তিনি জানান, প্রতি বুধবার সন্ধা সাড়ে ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত কৃষকদের সহায়তা নিয়ে এ ফাঁদ বসিয়ে ক্ষতিকর পোকা চিহ্নিত করে তা দমনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতে উৎপাদন বাড়বে।

শ্রীমঙ্গল কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. সিপন মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ ফাঁদ তৈরি পদ্ধতি কৃষকদেরও শিখিয়ে দেওয়া হচ্ছে। চার্জার লাইট দিয়ে তারা নিজেরাও তা করতে পারবেন। চাইলে তারা কীটনাশক ছাড়া এই ফাঁদ ব্যবহার করেও ক্ষতিকর পোকা দমন করতে পারবেন।

আলোক ফাঁদ পরিদর্শনে আরও উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার সামছুদ্দিন আহমেদ, উপজেলা উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার রকেন্দ্র শর্মা, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মী মো. মাসুকুর রহমান প্রমুখ।