‘ফেইসবুকে মেয়ে সেজে প্রতারণা’, আড়াই বছর পর ধরা

‘মেয়ে সেজে ফেইসবুকে আড়াই বছর প্রেম’ করা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশে।

বরগুনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 August 2021, 05:07 PM
Updated : 30 August 2021, 05:07 PM

রোববার বরগুনার বেতাগীর সীমান্তবর্তী বরিশালের বাকেরগঞ্জের নিয়ামতি বাসস্ট্যান্ড থেকে মো. সুমন খান (৩০) নামের এই যুবককে আটক করে স্থানীয়রা; পরে তাকে বেতাগী থানায় সোপর্দ করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোমবার সুমনকে বরগুনা আদালতে পাঠানো হয়েছে।

প্রতারণার শিকার টুটুল রায় বেতাগী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রয়াত রাধিকা জীবন রায়ের ছেলে।

এই ঘটনায় টুটুলের বড় ভাই হরিচন্দ্র রায় বাদী হয়ে বেতাগী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ঢাকার লালবাগের মো. সুমন মিয়া ফেইসবুকে জারা খান নামে ভুয়া আইডি খুলে প্রোফাইলে ব্যবহার করেন সুন্দরী মেয়ের ছবি। সেখানে নিজেকে মডেল হিসেবে উল্লেখ করেন। এই আইডির মাধ্যমে পরিচয় হয় বেতাগী পৌরসভার টুটুল রায়ের সঙ্গে।

এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমেরে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জারা খানরূপী সুমন নিজেকে বিত্তশালী বাবার মেয়ে বলে পরিচয় দেন।

এরপর বিভিন্ন অজুহাতে সুমন নানা অজুহাতে টুটুলের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

মামলায় আরও বলা হয়, এক পর্যায়ে টুটুল ও জারা খান পরস্পরকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই অনুযায়ী সুমন নিজেকে জারা খানের ভাই পরিচয় দিয়ে গত রোববার বরগুনার বেতাগী আসেন ঢাকা থেকে।

অভিযোগে বলা হয়, টুটুলকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা যাওয়ার পথে বেতাগীর সীমান্ত এলাকা বাকেরগঞ্জের নিয়ামতি বাসস্ট্যান্ড থেকে টুটুলের বন্ধুরা তাদের আটক করেন। তারা সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং এক পর্যায়ে সুমন তার প্রতারণা করার কথা স্বীকার করেন।

সুমন খানের সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে বোরকা, মেয়েদের পোশাক, রূপ চর্চার বিভিন্ন উপকরণ, কৃত্রিম চুল ও নেশা জাতীয় বিভিন্ন ট্যাবলেট পাওয়া যায় বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়।

বেতাগী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুস সালাম বলেন, সুমন খানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে ছদ্মবেশ ধারণ করে প্রতারণার অভিযোগে মামলা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে বরগুনায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া টুটুল রায়কে অচেতন অবস্থায় পুলিশের উপস্থিতিতে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলেও জানান পরিদর্শক সালাম।

সুমন খান স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, “আড়াই বছর টুটুলের সঙ্গে মেয়ের কণ্ঠে কথা বলে বিভিন্ন সময়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছি। এ ধরনের প্রতারণায় সহযোগিতা করে গ্রুপের মেয়ে সদস্যরাও। আমাদের চক্রের কাজ হলো সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে বিভিন্ন তরুণ ও তরুণীদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলা।” 

টুটুল রায় বলেন, “আমাকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে নিঃস্ব করা হয়েছে।”

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয়ের পর সম্পর্ক করার সময় সকলের সচেতন হওয়া দরকার বলে তিনি মনে করেন।