কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি, ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

উজানের ঢল এবং অতিবৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রামে ১৬টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 August 2021, 09:34 AM
Updated : 27 August 2021, 09:34 AM

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, শুক্রবার সকাল ৯টায় ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপূত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে তিস্তা নদীর পানি কমে ব্রিজ পয়েন্টে ৪৬ সেন্টিমিটার নিচে অবস্থান করছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন করে ডুবছে নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল। এতে পানিবন্দি হয়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ।

চারদিকে বন্যার পানি ছড়িয়ে পরায় প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ও শাকসবজি তলিয়ে গেছে। গো-খাদ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছে; সেই সঙ্গে তিস্তা, গঙ্গাধর ও ব্রহ্মপূত্র নদে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। গঙ্গাধর নদীতে গত দুইদিনে আরও ২০টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। এছাড়াও শতশত বিঘা জমিন পরেছে ভাঙনের কবলে।

শুক্রবার সরেজমিন দেখা যায়, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা, যাত্রাপুর, পাঁচগাছি, ভোগডাঙা ও ঘোগাদহ ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের বন্যার পানি ঢুকেছে। এসব এলাকার ৮০ ভাগ আমন ক্ষেত এখন পানির নিচে। ডুবে গেছে গ্রামীণ সড়ক।

সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের রাঙামাটি এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে পানিঢুকে রাঙামাটি, কাগজীপাড়া, হলোখানা, বড়লই, সারডোবসহ ১০টি গ্রামের কয়েকশ হেক্টর জমির আমন ক্ষেত তলিয়ে গেছে।

আরিফুল বলেন, ধরলা অববাহিকার মেকলি, কিংছিনাই, জয়কুমর, সারডোব, জগমোহনের চর, তিস্তারগতিয়াশাম, খিতাবখা, রামহরি, হাবুরহেলান, ঠুটাপাইকর, হোকডাঙা, চর বজরাসহ ৩০টি পয়েন্টে নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।

“উজানে ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত পানি বাড়তে পারে। ফলে স্বল্প মেয়াদী একটি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে এ অঞ্চলে। সে ক্ষেত্রে বন্যাদূর্গতদের দুর্ভোগ বৃদ্ধি পাবে।”

রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরন্নবী বুলু বলেন, কিংছিনাই গ্রামের ধরলার ভাঙনে গত এক সপ্তাহে ৩০টি পরিবার গৃহহীন হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মঞ্জুরুল হক বলেন, চলতি বছরের বন্যায় ৬ হাজার ৮শ’ হেক্টর রোপা আমন ও শাক-সবজি নিমজ্জিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের জন্য নাভিজাত বিআর-২৩ ও বিআর ৩৪ এর বিজ মজুত আছে। চলতি বছর ১ লাখ ২০ হাজার হেক্টর রোপা আমনের টার্গেটে কোন সমস্যা হবে না।