শনিবার ও রোববার দিনের বেলায় এই গাছগুলো কাটা হলেও সরকারি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা তা জানেন না বলে দাবি করছেন।
সম্প্রতি ১০০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের জন্য এখানে একটি পুকুর ভরাট করা হয়েছে। এই সময় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করলেও সরকারিভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পুরো পুকুরটি এখন বালুর মাঠে পরিণত হয়েছে।
পুরনো এই পুকুর ভরাটের সময়ও পৌরসভার অনুমতি নেওয়া হয়নি। আর এবার ভরাট করা ওই পুকুরের পড় ও আশপাশে থাকা দুইটি মেহগনি ও দুইটি কড়ই গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট কোনো দপ্তরের অনুমতি নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখানে ঠিকাদার আছে; আর স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ আছে। গাছ কাটার বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।”
স্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর মাদারীপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, “শিবচর হাসাপাতালে কোনো গাছ কাটার বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। গাছ কাটার বিষয়ে কোনো নির্দেশও আমাদের নেই। এখানে আনুষঙ্গিক সব দেখভালের জন্য কমিটি আছে। এই কমিটিতেও আমি নেই। সেই কমিটিতে সভাপতি সিভিল সার্জন, সদস্য সচিব শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ। গাছ কাটার বিষয় কেউ যদি আমাদের কথা বলে সেটা ভুল বলেছে।”
জানতে চাইলে মাদারীপুরের সিভিল সার্জন মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, “শিবচর স্বাস্থ্য কপ্লেক্সের অভ্যন্তরে গাছ কাটার প্রসঙ্গে আমি অবগত নই। সরকারি গাছ কাটতে হলে কিছু প্রক্রিয়া আছে। গাছ কেন কাটা হচ্ছে সেটা উল্লেখ করতে হবে। পরে বন বিভাগ গাছের রেট দেবে। পরে দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ওই গাছ কাটার অনুমতি পাবে। এখানে দরপত্র হয়েছে কিনা সেটাও আমার জানা নেই। হাসপাতালের অভ্যন্তরে বিনা অনুমতিতে যদি গাছ কাটা হয় বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
শিবচর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক বলেন, “সরকারি গাছ যেকোনো দপ্তরেরই হোক না কেন, সেটা কাটতে হলে বন বিভাগের কিছু দায়িত্ব আছে। শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে গাছ কাটার বিষয়ে আমাদের কেউ অবহিত করেনি। আমি কোনো ধরনের চিঠিও পাইনি। জানিও না।”
সরকারি গাছ জব্দ ও এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া কথা জানালেন শিবচর উপজেল নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, “উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরের পুকুর ভরাটের কথা শুনেছি। কিন্তু গাছ কাটার কথা জানি না। আমি সরেজমিনে গিয়ে দেখব। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনে গাছ জব্দ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”