তিস্তার পানি বিপদ সীমা ছাড়াল ডালিয়ায়

নীলফামারীতে একদিন পর ফের উজানে ভারী বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে বিপদ সীমা অতিক্রম করেছে তিস্তা নদীর পানি।

নীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2021, 02:39 PM
Updated : 19 August 2021, 02:39 PM

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নদীর পানি কয়েক দফা বৃদ্ধি পেয়ে সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে নদীর পানি বিপদ সীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারী ডালিয়া বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদদৌলা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। কয়েক দফায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে সন্ধ্যা ৬টা থেকে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

“উজানে ভারতের দোমোহানি পয়েন্টে সন্ধ্যা পর্যন্ত নদীর পানি বৃদ্ধি রয়েছে। দোমোহানি পয়েন্ট থেকে পানির ওই ঢল তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে আসতে কমপক্ষে ৬ ঘণ্টা সময় লাগবে। ওই ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পাবে।”   

পানি পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সব কটি (৪৪) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও এখন পর্যন্ত  কোথাও ‘বাধে ভাঙন দেখা দেয়নি’।

বুধবার সারাদিন নদীর পানি বিপদ সীমার ২৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে নদীর পানির বিপদ সীমা ৫২ দশমিক ৬০ মিটার।

তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী ও গয়াবাড়ী ইউনিয়নের ১৫টি চর গ্রাম প্লাবিত হয়ে পাঁচ হাজারের বেশি পরিবারের বাড়িতে পানি ঢুকেছে।

ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খাঁন বলেন, “ফের তিস্তা নদীর পানি বেড়ে ঝাড়সিংহেরশ্বর ও পূর্ব ছাতনাই গ্রামের প্রায় এক হাজার পরিবারের বাড়িঘরে পুনরায় পানি প্রবেশ করেছে।”

টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ময়নুল হক বলেন, “টাপুর চরে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বাঁধ ভাঙনের মুখে পড়েছে। বাঁধটি রক্ষায় সেখানে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে।

“পাশাপাশি ইউনিয়নের প্রায় ৭শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে কর্মহীন হয়ে পড়েছে।”

এদিকে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায় জানান, ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নে পানিবন্দিদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় সেখানে গত সপ্তাহে ২৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন। শুক্রবার সেখানে চাল দেওয়া হবে।

অন্যান্য ইউনিয়নেও খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দেওয়া হবে বলেন তিনি।

এদিকে ভারতের কেন্দ্রীয় পানি কমিশনের ওয়েব সাইটে দেখা যায়, দোমোহানি পয়েন্টে গেল ২৪ ঘণ্টায় ৯৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।