রাঙামাটি আড়মোড়া ভাঙলেও ফেরেনি জৌলুস পর্যটনে

পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ার প্রথম দিনে হ্রদ-পাহাড় ঘেরা রাঙামাটি শহরে পর্যটকের পা পড়েনি তেমন।

ফজলে এলাহী রাঙামাটি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2021, 12:58 PM
Updated : 19 August 2021, 12:58 PM

এ নিয়ে বৃহস্পতিবার কথা পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িতরা বললেন, আগামী মৌসুমে বোঝা যাবে কতটা জমবে তাদের ব্যবসা।

মহামারীর আগে বছর জুড়ে দেশি পর্যটকের পদভারে মুখর থাকত এ জেলার পর্যটনকেন্দ্র। শহর লাগোয়া দর্শনীয় স্থান থেকে শুরু করে দূর পাহাড়ে সাজেক অবধি দাপিয়ে বেড়াত লাখো পর্যটক। কিন্তু ১৪০ দিন মানুষের আনাগোনায় বিধিনিষেধে পাল্টে গেছে সেই দৃশ্যপট।

কাপ্তাই হ্রদে তিন দশক ধরে নৌ বিহারের বোট ব্যবসায় জড়িত রমজান আলী বলেন, খুব খুশি হয়েছিলাম লকডাউন তুলে দেওয়ার পর ১৯ অগাস্ট পর্যটনকেন্দ্র চালু করায়।

“কিন্তু প্রথমদিন মাত্র ৫টি বোট ভাড়ায় গেছে। বাকিরা আশায় বুক বেঁধে বসে ছিল সারাটা দিন। এভাবে চললে আমরা আদৌ বাঁচব কিনা জানি না “

পর্যটন ঘাটের শতাধিক বোটচালকসহ বিভিন্ন ঘাটের কয়েকশ ট্যুরিস্ট বোট চালকদের জীবিকার ভয়াবহ বাস্তবতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “তবে আমার মন বলছে, দিন বদলাবে, মানুষ আবার আসবে, আবার পর্যটকের পদভারে মুখর হবে কাপ্তাই হ্রদ।”

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত শহর সংলগ্ন পলওয়েল পার্ক, ডিসি বাংলো এবং পর্যটন কমপ্লেক্স সরেজমিন ঘুরে ম্লানচিত্রই দেখা গেল। এ শহরবাসীর বৈকালিক ঘোরাফেরা ছাড়া, তেমন কোনো পর্যটক চোখেই পড়েনি।

গেল কয়েক বছর ধরে ব্যতিক্রম নানা উদ্যোগ দিয়ে পর্যটক আকর্ষণে ভূমিকা রাখা রাঙামাটি পর্যটন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, “এ সময় আমাদের মাসে ন্যূনতম ৩৫ থেকে ৪০ লাখ টাকার ব্যবসা হয়। কিছুই তো হলো না গত ক’মাসে।”

বৃহস্পতিবার খোলার দিনের পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি জানান, মোটেলে তেমন বুকিং নেই, ভ্রাম্যমাণ পর্যটকও নেই বলা যায়। ‘সম্ভবত আগামী অক্টোবরে পর্যটন মৌসুম শুরু হলে, মানুষ হয়ত বের হবে আবার।

তবে সামনের কয়েক দিনে পরিস্থিতি কী হাল হবে কিছুটা বোঝা যাবে বলে মনে করছেন গত তিন মাসে কোটি টাকার ক্ষতির শিকার প্রতিষ্ঠানটির এই কর্মকর্তা।

এদিকে, বছর দুয়েক আগে কয়েক কোটি টাকা খরচ করে শহরের প্রাণকেন্দ্র পুরাতন বাস স্টেশন এলাকায় ‘স্কয়ার পার্ক’ নামে হোটেল চালু করেছিলেন সাবেক পৌর কাউন্সিলর নেয়াজ আহমেদ।

অল্প সময়ে জনপ্রিয়তা পাওয়া এ হোটেলের উদ্যোক্তা নেয়াজ বলেন, খুব খুশি মনেই হোটেল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে ফের চালু করেছি।

“ভেবেছিলাম প্রথম দিনে হয়ত ন্যুনতম পঞ্চাশ শতাংশ বুকিং হলেও হবে। কিন্তু প্রথম দিনের বুকিং ১০ শতাংশও ছাড়াল না।”

তারও শঙ্কা আগামী মৌসুমের আগে পরিস্থিতি খুব একটা বদলাবে না।

তবু মহামারীতে স্তব্ধ পাহাড়ে ফের পর্যটনশিল্পের আড়মোড়া ভেঙে বৃহস্পতিবারই গুছিয়ে নিচ্ছেন হোটেল মালিক, বোট চালক থেকে শুরু করে সবাই।