সোমবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যায় বিজিবির সঙ্গে পতাকা বৈঠকে এই ঘটনার জন্য বিএসএফ দুঃখ প্রকাশ করেছে।
এদিকে, পতাকা বৈঠক চলাকালে প্রায় দুই ঘণ্টা এই সড়কে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচল বন্ধ থাকে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর আলোচিত তিন বিঘা করিডোর গেট ২৪ ঘণ্টা জনসাধারণের চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দেন। ভারত সরকারের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি ও আলোচনার মাধ্যমে তিনি এই ব্যবস্থা করেন।
এরপর ৯ বছর ১০ মাসের মধ্যে এই প্রথম একটানা দুই ঘণ্টা সকল ধরনের যানবাহন ও সাধারণ লোকজনের চলাচল বন্ধ থাকে।
বিজিবি ও স্থানীয়রা জানান, সোমবার দুপুরে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার দক্ষিণ খড়িবাড়ি গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে জয়নাল আবেদীন (৩২) ও রশিদুল ইসলামের ছেলে আল মামুন (৩০) মোটরসাইকেল নিয়ে ‘দহগ্রামে ঢোকার সময় ভুল করে’ ভারতীয় সড়কে ঢুকে পড়েন এবং ট্রাফিক পয়েন্টের বাম দিকের সড়ক হয়ে প্রায় একশ গজ ভিতরে চলে যান।
এই কারণে ভারতীয় তিনবিঘা ক্যাম্পের টহল দলের বিএসএফ সদস্যরা ওই দুই বাংলাদেশিকে আটক করে রাইফেল দিয়ে এলোপাথারি মারধর করে। তারা মুখ, হাত-পা ও উরুতে আঘাত পান।
৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পানবাড়ি ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার নজরুল ইসলাম বলেন, পরে তিন বিঘা করিডোর পানবাড়ি চেকপোস্টে এসে দায়িত্বরত বিজিবি সদস্যদেরকে এই দুই যুবক বিএসএফের
পরে সন্ধ্যায় ৬টায় তিন বিঘা করিডোর গেটের পানবাড়ি অংশে রাস্তায় দুই দফা পতাকা বৈঠকে মিলিত হয় বিএসএফ ও বিজিবি।
“বৈঠকে ভারতীয় তিন বিঘা ও ভীম ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার ও অন্যান্য বিএসএফের কর্মকর্তারা অংশ নেন। বিএসএফ এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না বলে আশ্বস্ত করে।”
এদিকে, বৈঠকের সময় ভারতীয় সড়ক ও গেট ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের চলাচল প্রায় দুই ঘণ্টা বন্ধ থাকে। বাংলাদেশ থেকে দহগ্রামে প্রবেশ ও বের হওয়ার গেটের দুই দিকে শত শত যানবাহন এবং জনসাধারণ দাঁড়িয়ে থাকে।
সন্ধ্যা ৭টা ৫৬ মিনিটে পতাকা বৈঠক শেষে লোকজনের চলাচলের জন্য গেট ও সড়ক ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ সময় দহগ্রাম ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল মান্নান (৩৮) বলেন, “এখানে (গেটে) সামান্যতেই বিএসএফ মারমুখী আচরণ করে। মানুষের চলাচলে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। আমরা ভয়ের মধ্যে থাকি।”
একই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনুছ আলী (৪৫) বলেন, “তিন বিঘা করিডোর গেট ও সড়ক ট্রাফিক পয়েন্টের ভারতীয় ট্রাফিক শুধু ভারতীয় লোকজনদের চলাচলে সিগন্যাল দেয়। ওইখানে বাংলাদেশি ট্রাফিক রাখা দরকার।”
দহগ্রামের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মুনিরা বেগম (২৫) বলেন, “তিন বিঘা করিডোর গেট ও সড়ক দিয়ে হাঁটার সময় গাছের একটি পাতা ধরলেও বিএসএফ এসে বকুনি দেয়। দুই ছোট সন্তান নিয়ে অনেকক্ষণ ধরে বসে আছি। রাত হল। কখন যে বাড়ি ফিরব।”
এ ব্যাপারে বিজিবির রংপুর ৫১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মোহাম্মদ ইসহাক আলীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে কথা বলা সম্ভব হয়নি।