অবশেষে জালে ধরা পড়ল বিরল প্রজাতির সেই কুমির

ফরিদপুরে পদ্মা নদী সংলগ্ন জলাশয়ে ১৭ দিন ধরে থাকা বিরল প্রজাতির কুমিরটি উদ্ধার হয়েছে।

ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 August 2021, 01:26 PM
Updated : 9 August 2021, 01:26 PM

সোমবার দুপুরে পানিতে সেটিকে দেখতে পেয়ে গ্রামবাসী জাল দিয়ে আটক করে। পরে বনবিভাগে খবর দেয়। কুমিরটিকে বিকালে ওই জলাশয়ে জালে আটকে ডাঙায় তোলা হয়।

ফরিদপুরের সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নে ছালাম খাঁর ডাঙ্গি গ্রামে পদ্মা নদী সংলগ্ন ফালুর কুম নামে পরিচিত ওই জলাশয়ে এসে অবস্থান নেয় মিঠা পানির ওই কুমির।

ছালাম খাঁর ডাঙ্গি গ্রামের স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার কালাম খান বলেন, “এতদিন গভীর পানিতে থাকার পর আজ কুমিরটি পশ্চিমের অল্প পানিতে এসে টানের দিকে উঠতে থাকে।

“সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে স্থানীয়রা সেটি দেখতে পেয়ে অন্যদের খবর দেয়। এরপর সবাই মিলে চারদিকে বড় জাল দিয়ে ঘেরাও করে কুমিরটিকে আটক করা হয়।”

কালাম খান জানান, বিকেল ৬টার দিকে তারা কুমিরটিকে সেখান হতে জাল দিয়ে বেঁধে ট্রলারে করে ফরিদপুরের দিকে নিয়ে আসার জন্য গোলডাঙ্গি হতে রওনা হয়েছেন। আপাতত সেটি ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামানের হেফাজতে রাখা হবে।

সাবেক ওয়ার্ড মেম্বার মোস্তফা সরোয়ার বলেন, কুমিরটি প্রায় সাত ফুট লম্বা এবং দেড় ফুট চওড়া। এটি একটি বড় কুমির। নদীতে গত কয়েকদিন পানি কমতে থাকায় সেটি ডাঙার দিকে চলে এসেছিল।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান বলেন, তারা বিষয়টি এরইমধ্যে বনবিভাগকে জানিয়েছেন। তারা এলে তাদেরকে কুমিরটি হস্তান্তর করা হবে। কুমরিটি নিরাপদে আটক করতে পারায় গ্রামবাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে বলে জানান তিনি।

ফরিদপুর বনবিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তা সাঈদুর রহমান বলেন, “কুমিরটিকে আটক করতে পারার খবর পেয়ে বন্যপ্রাণী সম্প্রসারণ এবং প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা অঞ্চলের কর্মকর্তারা ফরিদপুরে আসছেন। তারা এলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কুমিরটির অবমুক্তির ব্যাপারে।”

জানা গেছে, গত ২২ জুলাই কুমিরটি স্থানীয়দের নজরে আসার পর প্রথম ফরিদপুরের বনবিভাগ এবং পরে খুলনা থেকে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ১২ সদস্যের দল ফরিদপুরে এসে দুই দফায় সেটি উদ্ধারে অভিযান চালায়। 

কুমিরের আগমনের খবরে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক চাঞ্চল্যের পাশাপাশি আতঙ্কও তৈরি হয়। কুমিরটিকে বিরক্ত না করতে এবং অহেতুক আতঙ্কিত না হওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়। অনেকে সেটি দেখতে ছুটে যান দুর্গম চরে। 

বনবিভাগের কর্মকর্তারা জানান, মিঠাপানির সম্প্রতি বিরল প্রজাতির প্রায় বিলুপ্ত দুটি কুমির উদ্ধার করেছে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, কিন্তু কোনো নারী কুমির নেই। তাদের আশা, এ কুমির নারী প্রজাতির হলে সাফারি পার্কে থাকা পুরুষ প্রজাতির কুমিরের সাথে প্রজনন ঘটানোর। যাতে বিলুপ্ত প্রায় এ প্রজাতির কুমিরের বংশবৃদ্ধি করানো যায়।