ফরিদপুরের শেকলবন্দি সেই রবিউল মানসিক হাসপাতালে

দেড় দশক ধরে মাটির গর্তে শেকলবন্দি থাকা ফরিদপুরের রবিউলকে পাবনায় মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 August 2021, 10:59 AM
Updated : 3 August 2021, 10:59 AM

মঙ্গলবার ভোরে বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের পশ্চিম চরবর্ণি গ্রামের বাড়ি থেকে তাকে পাবনা পাঠানো হয়।

এ সময় তার বাবা নুরুল ইসলাম, মা আমেনা বেগম ও ফুপা সঙ্গে ছিলেন।

পশ্চিম চরবর্ণি গ্রামের ৩৫ বছর বয়সী রবিউল গত ১৫ বছর ধরে মাটির গর্তে শিকলবন্দি অবস্থায় রয়েছেন বলে তার পরিবার ও স্থানীয়রা জানিয়েছে।

এই বিষয়ে গত শুক্রবার ‘ফরিদপুরের ‘১৫ বছর’ মাটির গর্তে শেকলবন্দি এক ব্যক্তি’ শিরোনামে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “আমার মতো হতদরিদ্র মানুষের পাশে এভাবে কেউ দাঁড়াবে ভাবিনি। আমার রবিউলকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না হলে হয়ত সারাজীবন ওই মাটির গর্তেই থাকতে হতো তাকে।”

নুরুল ইসলাম স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে সঙ্গে গণমাধ্যমকেও ধন্যবাদ জানান।  

বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দের উদ্যোগে উপজেলা সমাজ সেবার অর্থায়নে রবিউলকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।

বোয়ালমারী থানার ওসি নুরুল আলম ব্যক্তি উদ্যোগে নগদ অর্থ ও একটি মাইক্রোবাস দিয়ে সহায়তা করেছেন।

এর আগে সোমবার (২ আগস্ট) বেলা ৩টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ইউএনও ঝোটন চন্দ বোয়ালমারী উপজেলা সমাজ কল্যাণ পরিষদের পক্ষ থেকে মানসিকভাবে অসুস্থ রবিউল ইসলামের বাবার হাতে চারটি টি-শার্ট ও চারটি ট্রাউজার্স তুলে দেন। 

এ ব্যাপারে ইউএনও ঝোটন চন্দ বলেন, বিনামূল্যে রবিউলের সুচিকিৎসার জন্য পাবনা মানসিক হাসপাতালে ভর্তির যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই তাকে পাঠানো হয়েছে।

বোয়ালমারী থানার ওসি নূরুল ইসলাম বলেন, “রবিউলের খবরটি জানার পরেই পুলিশ সুপারের নির্দেশে তার বাড়ি ছুটে যাই এবং আমরা তাকে আর্থিক সহায়তা করি। প্রয়োজনে আরও করা হবে।”

ফরিদপুর জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে সরকার সারা দেশের দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য নানা কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। আর সেখানে রবিউলের মতো মানুষ সুচিকিৎসা পাবে না এটা হতে পারে না।

“আমরা পাবনা মানসিক হাসপাতালের পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে তার সকল ধরনের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করেছি। আশা করছি রবিউল ভালো হয়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে।”