ডেঙ্গু চিকিৎসায় পৃথক ওয়ার্ড হচ্ছে খুলনা মেডিকেলে

ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৃথক ওয়ার্ড রাখার সিন্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। 

খুলনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 August 2021, 07:37 AM
Updated : 3 August 2021, 07:37 AM

খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ফেরদৌসী আক্তার জানান, খুলনা বিভাগের ১০ জেলার চলতি বছরের শুরু থেকে সোমবার পর্যন্ত ৩১ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে।

এর মধ্যে যশোরের ২৩ জন, নড়াইলের তিনজন এবং কুষ্টিয়ায় একজন রয়েছেন। এছাড়া খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চারজনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে।

আক্রান্তদের মধ্যে বর্তমানে পাঁচজন জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাকিরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

এ অবস্থায় ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৃথক ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানান ফেরদৌসী।

এদিকে খুলনা বিভাগের সব হাসপাতাল এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার পাশাপাশি ডেঙ্গু পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করতে বলা হয়েছে বলে খুলনার সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ জানান।

খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ মেহেদী নেওয়াজ জানান, বর্তমানে তার হাসপাতালে দুই একজন ডেঙ্গু রোগী আসছে। তাদের মেডিসিন ওয়ার্ডেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় প্লাটিলেট দিতে হাসপাতালে সেলফ সেপারেটর মেশিন প্রয়োজন। যার মাধ্যমে সুস্থ মানুষের রক্ত থেকে প্লাটিলেট আলাদা করে ডেঙ্গু রোগীর শরীরে দেওয়া যাবে।

হাসপাতালের পরিচালক ডা. রবিউল হাসান বলেন, মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা এক রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে রোববার ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। তাকে আপাতত ৫-৬ নম্বর ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দিতে পৃথক ওয়ার্ডের জন্য হাসপাতালের চতুর্থ তলার কয়েকটি কক্ষ দেখা হয়েছে।

এ নিয়ে বৃহস্পতিবার মিটিং ডাকা হয়েছে। ওই মিটিংয়ে পৃথক ওয়ার্ড করা, ডেঙ্গু বিষয়ক চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য কর্মচারীদের সমন্বয়ে কমিটি করা, মুখপাত্র নিয়োগ দেওয়াসহ বিস্তারিত বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান তিনি।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, বর্তমানে সজীব শেখ নামের এক রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত  হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

৩২ বছর বয়সী সজীব বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ জেলার কচুবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ঢাকায় চাকরি করেন। ঈদের সময় গ্রামে গিয়ে জ্বরে পড়েন। পরীক্ষা করে জানতে পারেন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত।

ডা. সুহাস বলেন, সোমবার বিকেলে বাগেরহাটের রামপালের বাশতলি এলাকা থেকে অতিস নামের চার বছরের এক শিশুকে ডেঙ্গু আক্রান্ত  সন্দেহে ভর্তি করা হয়েছে। রাতে ভর্তি করা হয় লিংকন ঘোষ (১০) নামের আরও একজনকে। তার বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়ার লুটিয়া এলাকায়।

“তাদের দুজনকে আপাতত শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাদের পরীক্ষার পর ডেঙ্গু কি না সেটি নিশ্চিত হওয়া যাবে।”

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. জিল্লুর রহমান (তরুণ) বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের জন্য মূলত প্রয়োজন রক্ত। রক্তের মজুদ না থাকলেও রক্তদাতাদের তালিকা তাদের কাছে রয়েছে। ফেইসবুকে এ সংক্রান্ত একাধিক গ্রুপও আছে। সুতরাং রক্তের প্রয়োজন হলে দ্রুত তাদেরকে রক্তের যোগান দেওয়া যাবে।

খুলনা সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. স্বপন কুমার হালদার বলেন, ডেঙ্গু বিষয় নিয়ে তাদের দুটি বিভাগ কাজ করছে। আর স্বাস্থ্য বিভাগের ব্যবস্থাপনায় প্রতিনিয়ত ডেঙ্গু বিষয়ে প্রচারণা চলছে। বিশেষকরে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।